২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

দুমকীতে নলকূপ আছে পানি নেই,দুর্ভোগে জনজীবন

জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকী( পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পটুয়াখালী জেলার দুমকী উপজেলায় দীর্ঘ ২ বছর ধরে শুকনা মৌসুমে ভয়াবহ পানির সংকটে ভুগছে সাধারণ মানুষ।
‎উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে হস্তচালিত গভীর নলকুপে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় স্বাভাবিক পানি উত্তোলন ব্যাহত হচ্ছে।

‎ফলে পানীয়, রান্না ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানির জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো পরিবার।সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় , পাংগাশিয়া ইউনিয়নের আলগীসহ কয়েকটি গ্রাম, লেবুখালী ইউনিয়নের লেবুখালী ও উত্তরাঞ্চল, আংগারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম আংগারিয়া ও পশ্চিম এলাকা এবং শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দুমকী, শ্রীরামপুর ও উত্তর দুমকী এলাকায় শুকনা মৌসুম এলেই হস্তচালিত গভীর নলকুপে পানি উঠে না।স্থানীয়রা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযোগ জানালে কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন করে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ভুক্তভোগী মোঃ শাহজাহান জানান, শুকনা মৌসুমে এলাকার খালগুলো প্রায় সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। পাশাপাশি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পীরতলা জামলা ও আংগারিয়া খাল ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে খালের পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় জনসাধারণ বিকল্প পানির উৎস থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই বাধ্য হয়ে দূষিত পানি ব্যবহার করছে, যা থেকে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

আলী আজম বলেন, “প্রতিবছর শুকনা মৌসুম এলেই শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পানির সংকটে পড়তে হয়।বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে পানি সংগ্রহ করে কলেজের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।‎‎আংগারিয়া ইউনিয়নের ঝাটরা গ্রামের বাসিন্দা আবু হানিফ জানান, গভীর নলকুপ বসিয়েও শুকনা মৌসুম শুরু হলে পানি পাওয়া যায় না।‎অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব এলাকায় বিগত সময়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার ফুট গভীরে টিউবয়েল স্থাপন করা হলেও দুই বছর আগে বরিশাল ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোডাকশন টিউবয়েল স্থাপনের পর পানির স্তর আরও নিচে নেমে যায়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে আশপাশের জনবসতিতে।

‎সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুমকী উপজেলায় সরকারিভাবে ১ হাজার ৫৩০টি এবং বেসরকারিভাবে প্রায় ১ হাজার টিউবয়েল স্থাপন করা হয়েছে। তবুও অনেক এলাকায় ব্যক্তিগত খরচে টিউবয়েল ও মোটর ব্যবহার করেও পর্যাপ্ত পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না।

বেসরকারি এনজিও সংস্থার উপজেলা সভাপতি ও পিএসএস-এর পরিচালক হোসাইন আহমাদ কবির হাওলাদার বলেন, “জনগণের পানির দুর্ভোগ লাঘবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
‎এ বিষয়ে দুমকী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী নিপা আক্তার জানান, ভবিষ্যতে হস্তচালিত নলকুপের পরিবর্তে সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনের লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top