২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি

অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সজীব হাসান (বগুড়া) প্রতিনিধি:

বগুড়ায় অনলাইনে জুয়া খেলার মুদ্রা কেনাবেচার ১০ লাখ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে বন্ধুদের হাতে খুন হন ব্যবসায়ী পিন্টু আকন্দ (৩৮)। আদালতে আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাতে আজ শুক্রবার দুপুরে পুলিশের একটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে। গত মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ী পিন্টুকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

তিনি দুপচাঁচিয়া বাজার এলাকায় লোটো শোরুমের ব্যবস্থাপক ছিলেন। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক সানোয়ারসহ (৪০), সাকিব (৩৫) এনামুল (৩৮) ও বাবলু মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এনামুল ও বাবলু মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক গতকাল বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি দুজন পুলিশ রিমান্ডে আছেন।

আদালতে এনামুল ও বাবুল মিয়ার স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহত পিন্টু আকন্দের ঘনিষ্ঠ বন্ধু দুপচাঁচিয়া উপজেলার ডিম শহর এলাকার জুয়েল ও সজীব। তাঁদের মাধ্যমে পিন্টু অনলাইনে জুয়ার খেলার মুদ্রা বিট কয়েন, জুয়া খেলার অ্যাপ ও সফটওয়্যার কেনাবেচা করতেন। সম্প্রতি বিট কয়েন কেনাবেচার ১০ লাখ টাকা নিয়ে জুয়েল ও সজীবের সঙ্গে পিন্টুর বিরোধ হয়।

এ নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে সালিস বৈঠক করেও কোনো সুরাহা মেলেনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাকিব ডিবি পুলিশ সেজে আসামি ধরতে রাজশাহী যাবেন—এমন কথা চালক সানোয়ারকে বলে মাইক্রোবাসটি ভাড়া করা হয়।

সেই মাইক্রোবাসে জুয়েল, সজীব, মুক্তার ও জোবায়ের লোটো শোরুম থেকে পিন্টুকে মাইক্রোবাসে তুলে নেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে ছিল পিন্টুকে এনামুল ও বাবলুর কাছে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ১০ লাখ টাকা আদায় করবে।

মাইক্রোবাসে ওঠানোর পর পিন্টু চিৎকার শুরু করলে তাঁর মুখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে তাঁকে মাইক্রোবাসের পেছনের সিটে ফেলে রাখা হয়। আদমদীঘি উপজেলার শালগ্রামে এনামুল ও বাবলুর কাছে পৌঁছানোর পর তাঁরা দেখতে পান পিন্টু মারা গেছেন।

এরপর লাশ ফেলে দেওয়ার জন্য মাইক্রোবাস নিয়ে আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের রাস্তায় ঘুরে বেড়ান তাঁরা। মাইক্রোবাসের মালিক জিপিএসের মাধ্যমে গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক এবং চালক ফোন রিসিভ না করায় তিনি গাড়িটি বন্ধ করে দেন।

এর পরপরই তাঁরা পিন্টুর লাশ মাইক্রোবাসে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। আজ দুপুরে দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, পিন্টু আকন্দ খুনের ঘটনায় তার স্ত্রী সাবিনাজ বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুজন পুলিশ রিমান্ডে আছেন। মূল আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top