মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারী–০১ (ডোমার–ডিমলা) আসনে প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে বিএনপির মনোনয়ন না দিলে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করা হলে ডোমার–ডিমলা উপজেলা অচল করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারীর ডিমলায় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে বিএনপি প্রার্থী করার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট এলাকার বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির উপদেষ্টা অধ্যাপক রইছুল আলম চৌধুরী। বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মনোয়ার চৌধুরী, গোলাম রব্বানী প্রধান, অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আশিক উল ইসলাম লেমন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব হালিমুর রহমান লেমনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেন বলেন, “জোট থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, সেটি ভুল সিদ্ধান্ত। এলাকায় কোনো জরিপ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীকে এলাকার মানুষ চেনেন না। নির্বাচনে জয় তো দূরের কথা, তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। অন্যদিকে তুহিন ভাই এই আসনে নিশ্চিত বিজয়ী হবেন—এই অবস্থান তাঁর রয়েছে।”
জেলা বিএনপির সদস্য অধ্যাপিকা সেতারা সুলতানা চৌধুরী বলেন, “আমাদের ছেলেকে আমরা আমাদের এলাকাতেই চাই। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের কাছে অনুরোধ—দয়া করে আপনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। আমরা ধানের শীষ প্রতীকে তুহিনকে নীলফামারী–০১ আসনটি উপহার দিতে চাই।”
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রইছুল আলম চৌধুরী বলেন, “প্রকৌশলী তুহিনকে মনোনয়ন না দিলে এলাকা অচল হয়ে যাবে। নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। ১৯৯৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যিনি মেধা ও শ্রম দিয়ে এই বিএনপিকে দাঁড় করিয়েছেন, তিনি প্রকৌশলী তুহিন। তাঁকে অন্য আসনে মনোনয়ন দেওয়ার পরিকল্পনা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। তিনি আমাদের সম্পদ—আমরা এটা মানি না।”
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধ্যাপক রইছুল আলম চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দ্রুত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করা হলে ডিমলা উপজেলা অচল করে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, নীলফামারী–০১ আসনে প্রকৌশলী তুহিনকে প্রার্থী করার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ, মশাল মিছিল এবং টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।