২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সালমান এফ রহমান জনতার এক শাখা থেকেই ২৭ হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন

সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান রিমান্ডে গোয়েন্দাদের জেরার মুখে অর্থ লোপাটের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিতে শুরু করেছেন।

শুধু জনতা ব্যাংকের এক শাখা থেকেই ঋণের নামে সালমান এফ রহমান বের করে নিয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা। যা ওই শাখার মোট ঋণের ৬৫ শতাংশ। এসব ঋণের অধিকাংশই ছিল বেনামি। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগে বেনামি ঋণগুলো তার নামে সংযুক্ত করেছে। জনতা ব্যাংকের নথি ঘেঁটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যাংকার বলেন, বেনামি ঋণের জনক ছিলেন সালমান এফ রহমান। যা ধীরে ধীরে পুরো ব্যাংক খাতে ছড়িয়ে পড়ে। এখন প্রায় সব অসাধু ব্যবসায়ীর বেনামি ঋণ আছে। বেনামি ঋণকে পিতৃপরিচয়হীন সন্তানের সঙ্গে তুলনা করা হয়। অবৈধ সন্তানের বাবা যেমন খুঁজে পাওয়া যায় না, তেমনি বেনামি ঋণের সুবিধাভোগীকে সাদা চোখে দেখা যায় না।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতে লুটপাটের বেশির ভাগই বেনামি ঋণ। অর্থাৎ ঋণ নেন একজন, ভোগ করেন অন্যজন। প্রকৃত সুবিধাভোগী থাকেন সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত সব ধরনের বেনামি ঋণ খুঁজে বের করা। তা না হলে ব্যাংক খাত টিকবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বেক্সিমকো গ্রুপ এবং গ্রুপ সম্পর্কিত মোট ৩২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২৬ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। এসব ঋণের বেশির ভাগই নেওয়া হয় ২০২১, ২২ ও ২৩ সালে।

এর মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস ৬০৯ কোটি, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস ৭৯৮ কোটি, অটামলুপ অ্যাপারেলস ৮২২ কোটি, বে সিটি অ্যাপারেলস ৮৯২ কোটি, বেক্সিমকো লিমিটেড ২ হাজার ২১৬ কোটি, বেক্সিমকো পিপিই ২৬ কোটি, বেক্সিমকো ফ্যাশনস ৯৩৬ কোটি, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস ৮৮৫ কোটি, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস ৯৬১ কোটি, কজি অ্যাপারেলস ৯০৬ কোটি, ক্রিসেন্ট ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন ১ হাজার ৬৯০ কোটি, এসকর্প অ্যাপারেলস ৮১৯ কোটি, অ্যাসেস ফ্যাশনস ১ হাজার ৭৫৮ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস ১ হাজার ২৫০ কোটি, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস ইউনিট-টু ৬৪৯ কোটি, কাঁচপুর অ্যাপারেলস ৭৫৯ কোটি, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস ৭৩২ কোটি, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ ১ হাজার ৬৮৬ কোটি, পিয়ারলেস গার্মেন্টস ৯৬০ কোটি, পিংক মেকার অ্যাপারেলস ৯০২ কোটি, প্লাটিনাম গার্মেন্টস ৮৩৭ কোটি, শাইনপুকুর গার্মেন্টস ৩৩৩ কোটি, স্কাই নেট অ্যাপারেলস ৭৩৮ কোটি, প্রিংফুল অ্যাপারেলস ৭৬০ কোটি, আরবান ফ্যাশনস ৭০৪ কোটি, হোয়াইট বে অ্যাপারেলস ৮৮৫ কোটি, ইউন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস ৭৭২ কোটি, ইয়োলো অ্যাপারেলস ১ হাজার ৫০ কোটি, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজ ৯৬ কোটি, আর আর ওয়াশিং ৯৭ কোটি, এসকর্প এলপিজি ১১ কোটি ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ৩৬০ কোটি টাকা। এসব ঋণের বেশির ভাগই বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ছিল। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলোকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দেখায়।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top