১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

টালমাটাল দেশের সোনার বাজার, মিলছে না ক্রেতা

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দেশের বাজারে সোনার দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে। সবশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করে সোনা ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনটি।

সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা। এর সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট ও ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যোগ করে সোনার অলংকার বিক্রি হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহে এক আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৬৮২ ডলার পর্যন্ত ওঠে। এরপর দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে (সোমবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত) প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৮ ডলার।

বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক যে প্রেক্ষাপট, তাতে সোনার দাম কখন কোন দিকে যায় কেউ বলতে পারে না। তবে কমার সম্ভাবনা খুবই কম। সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট আছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের হুংকার, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষ এখন সোনা কেনা নিরাপদ মনে করছে না।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে সোনার দাম নিয়ন্ত্রণ করে ৩০ জনের মতো। এর মধ্যে আমাদের এশিয়ার আছেন মাত্র একজন। বেশির ভাগ ইসরায়েলের। এখন ইসরায়েলে যুদ্ধ চলছে। সোনার দাম বাড়ার এটি একটি বড় কারণ।’

সোনার বাজার যারা নিয়ন্ত্রণ করে তাদের নাম কি কখনো প্রকাশ হয়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘না এদের নাম প্রকাশ হয়নি। তবে তাদের বেশির ভাগ ইহুদি এবং ইসরায়েলি।’

দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ায় আপনাদের ব্যবসায় কী ধরনের প্রভাব পড়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায় এত ধস নামছে বলে বোঝানো যাবে না। কোনো দোকানে ক্রেতা নেই। এভাবে চলতে থাকলে অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন। সোনার দাম বাড়ার কারণে শুধু বাংলাদেশের সোনার দোকানে বিক্রি কমছে তা নয়, সারা বিশ্বেই কমেছে। দুবাই, সৌদি, বাহরাইন, ইরাক, ইরান, কুয়েত সব জায়গায় সোনার ক্রেতা খুব কম।’

বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভূরাজনীতি বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার একটি কারণ। আর একটি কারণ রিজার্ভ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সোনা মজুত করা হচ্ছে। এখন সোনার দাম বাড়ার বিশেষ কারণ ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া। এ কারণে গত সপ্তাহে সোনার দাম বড় অংকে বেড়েছে। সুদের হার কমানোর সরাসরি প্রভাব পড়ছে সোনার দামের ওপর। এখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে।’

দাম বাড়ার কারণে আপনাদের ব্যবসায় কী ধরনের প্রভাব পড়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। দোকান প্রায় ফাঁকা। আমাদের হিসাবে বিক্রি ৬০-৭০ শতাংশ কমে গেছে। আমরা যেভাবে চলছি, এটাকে চলা বলে না। এটা এক ধরনের স্থবিরতা।’

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top