২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

তিস্তা সেচ প্রকল্প থেকে প্রায় ৬লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন রংপুর বিভাগের কৃষক

মোঃ বাদশা প্রমানিক নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।এর মধ্যে রংপুরে ১ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৬ হেক্টর, গাইবান্ধায় ১ লাখ ২৯ হাজার ১৫ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৬০ হেক্টর, লালমনিরহাট ৪৮ হেক্টর ও নীলফামারী জেলায় ৮১ হাজার ৮৯৭ হেক্টর। গত বছর ৫ লাখ ৭ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছিল।এ তথ্য জানিয়েছেন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান।

তিনি আরো জানান, দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা সেচ প্রকল্পে র (তিস্তা ব্যারেজ) কমান্ড এলাকার শেষ সক্ষমতা বাড়াতে ১৪৫২ কোটি টাকার সংস্কার ও পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজ শেষ হলে ২০২৭ সালের জানুয়ারি থেকে দিনাজপুরের ক্যানেলের দুই ধারের কৃষকেরা অতিরিক্ত ১০৪০০০হেক্টর জমিতে সুবিধা পাবেন।

ব্যারেজ প্রকল্প (ফেজ-১) সেচ সুবিধার আওতায় আনা হয় নীলফামারী সদর, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, রংপুর সদর, গঙ্গাচড়া, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ ও দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, খানসামা। প্রধান খাল ৩৩ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। প্রধান খালে পানি সরবরাহ ক্ষমতা ২৮৩ কিউসেক।

প্রথমের দিকে দিনাজপুর ক্যানেলের সেচ যোগ্য এলাকা এক লাখ ১১ হাজার ৪০৬ হেক্টর ধরা হলেও বাস্তবায়িত হয়েছিল ৯১ হাজার ২২৬ হেক্টর। কিন্তু ক্যানেলের বুক ভরাট হওয়ার কারণে গড়ে ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হতো। ২০২১ সালে জুলাই থেকে সেচের সক্ষমতা বাড়াতে নতুনভাবে সংস্কারের কাজ হাতে নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এতে মোট ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয় এক হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, তিস্তা সেচ প্রকল্প কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সংস্কার প্রকল্প।

এদিকে কমান্ড এলাকার কৃষকরা জানায়, আমন ধান বৃষ্টি নির্ভর আর বোরো ধান সেচ নির্ভর। ক্যানেলের পানি,প্রতি বিঘায় সেচ খরচ মাত্র ১৫২ দশমিক ৩৯ টাকা। একর প্রতি ৪৮০ টাকা খরচ হয়। আর শ্যালো বা বিদ্যুৎ চালিত পাম্পে বিঘায় খরচ হয় ১১০০-১২০০ টাকা। ক্যানেলের সেচ পাঁচ জেলার কৃষকের জন্য আশীর্বাদ।

বাপাউবোর রংপুর বিভাগীয় মুখ্য সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অমলেশ চন্দ্র রায় জানান, ক্যানেলে খনন কাজ চলমান থাকায় কিছুটা সেচ দিতে দেরি হচ্ছে। আশা করি, জানুয়ারি শেষ নাগাদ পুরোদমে বোরো চাষ শুরু হবে।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় ৫ লাখ ৮ হাজার ৯৭৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একই প্রকল্পের বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকেীশলী মিজানুর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ১২টি উপজেলায় সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। নতুন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে এর সক্ষমতা বহুলাংশে বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, এবার বোরো মৌসুমে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হবে। এজন্য এলাকায় কৃষকদের সাথে বৈঠক করছি। কোন এলাকায় কি পরিমাণ সেচ প্রয়োজন, সেটি জানার পর আমরা সেচ ব্যবস্থা পরিচালনা করবো। বাস্তবতার নিরিখে সংস্কার কাজ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top