১৭ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

বিহারি ক্যাম্পের তরুণদের বাংলা ভাষা-উচ্চশিক্ষায় আগ্রহ বাড়ছে

রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প যা ‘বিহারি ক্যাম্প’ নামেও পরিচত। এ ক্যাম্পে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। ক্যাম্পে প্রবেশ করলেই মনে হয় ভারতের হিন্দিভাষী অথবা পাকিস্তানের কোনো অঞ্চলে প্রবেশ করেছি। এই বিহারি ক্যাম্পেও স্থানীয়রা সাধারণত হিন্দি অথবা উর্দু ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সেক্ষেত্রে প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি। অন্যদিকে, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ক্যাম্পের তরুণরা শিক্ষাদীক্ষায় যেমন ধীরে ধীরে এগোচ্ছে, তাদের মধ্যে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহও বাড়ছে। তবে শিক্ষিত হয়েও চাকরির ক্ষেত্রে তাদের শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। সমাজের মূলস্রোতেও এখনো পুরোপুরি আসতে পারেনি তারা।

ক্যাম্পের ভেতরে জামা-কাপড়ের দোকান নিয়ে বসে আছেন উজ্জ্বল হোসেন। এইচএসসি পাস করেই নিজে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। যেটুকু পড়ালেখা সেটাও করেছেন নিজের চেষ্টায়। তার দোকানেই আড্ডা দিচ্ছিলেন ক্যাম্পের আরও দুই যুবক আবু সায়েম ও আলামিন। সায়েম সেলুনে কাজ করে মাসে আয় করেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আলামিন মোটরসাইকেল মেকানিক।

সেখানেই জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের কথা হয় উজ্জ্বল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিজের উদ্যোগে পড়ালেখা করেছি। কিন্তু চাকরি পাইনি। অনেকে যখন বাসার ঠিকানা জিজ্ঞেস করে তখন বিহারী ক্যাম্পের নাম শুনে আর চাকরি দিতে চায় না। অনেকে আমাদের বিশ্বাস করতে চায় না। আমাদের প্রতি তাদের এমন মনোভাব কেন, জানি না।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনের ও ইতিহাসের একটি স্মরণীয় দিন। দিনটি এতটাই স্মরণীয় যে শুধু ‘একুশে’ বললেই আমরা ধরে নিই একুশে ফেব্রুয়ারির কথা বলা হচ্ছে। একুশ আমাদের প্রেরণা, একুশ আমাদের অহংকার। ভাষার মর্যাদা রক্ষার এ দিনটি পালন করছেন বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দারাও। ক্যাম্পের বাসিন্দা সাহিনা খানম। তার একমাত্র ছেলে আহনাফ হোসেন এদিন সকাল সকাল মোহাম্মদপুর বালক বিদ্যালয়ে চলে যায়, ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

এসপিজিআরসির সভাপতি শওকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের সব ক্যাম্পেই তরুণেরা কষ্ট হলেও পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলা ভাষার প্রতি তাদের আগ্রহও বেশি। স্থানীয় সংসদ সদস্য নানক সাহেব (বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক) ক্যাম্পের অনেক শিক্ষিত ছেলেকে চাকরি দিয়েছেন। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, আমাদের ক্যাম্পের সন্তানদের নিজের সন্তান মনে করে চাকরি দিন। ওদের একটু ভালোভাবে বাঁচতে সহায়তা করুন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top