২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

জুলাই অভ্যুত্থানে ৫ হাজার মানুষ মারার হুমকি, পবিপ্রবি শিক্ষক বরখাস্ত

মোঃ ফাহিম,পবিপ্রবি প্রতিনিধি:

জুলাই অভ্যুত্থানে ৫ হাজার মানুষ হত্যার হুমকি, আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং শিক্ষার্থীদের হল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বিতর্কিত শিক্ষক অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসুকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীর সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধি ২(ছ) ধারার লঙ্ঘন হয়েছে মর্মে ড. সন্তোষ কুমার বসুকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর জন্য আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব প্রদান করতে বলা হয়েছে।

অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, “আপনি অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু, জুলাই বিপ্লব ২০২৪ চলাকালীন প্রক্টরের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ৫০০০ (পাঁচ হাজার) ছাত্র হত্যার হুমকি প্রদান করেন, যা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে এবং জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও আপনি শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে হল থেকে বের করে দেন এবং ডিজিএফআই ও এনএসআই এর রিপোর্ট আছে বলে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন।”

এমতাবস্থায় তাকে চাকরিতে বহাল রাখা জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি স্বরূপ বিবেচিত হওয়ায় এ আদেশ জারি করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়। যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হলে ড. সন্তোষ কুমারের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও অফিস আদেশে জানানো হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি সরকারি ও পবিপ্রবি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে নির্দেশনা দিতে জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে কয়েকজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে যান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “বাংলাদেশের সরকার খুব সহজে ক্ষমতা ছাড়বে না, গদি ছাড়বে না। যদি আরও ৫ হাজার মানুষ মারা লাগে, তবুও সরকার চিন্তা করবে না।”

শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে “এই মিয়া এই” শব্দ উচ্চারণ করে তাদের দিকে তেড়ে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যাকে “খোঁড়া যুক্তি” আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

পরবর্তীতে তার এসব বক্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এসময় বিভিন্ন সময়ে অযাচিতভাবে শিক্ষার্থীদের ফেল করানো, নম্বর কম দেওয়া ও অপমান করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠে আসে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

প্রসঙ্গত, জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সময়েই শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে গত ৪ আগস্ট তাকে প্রক্টর পদ থেকে অপসারণ করে তৎকালীন প্রশাসন। পরবর্তীতে তাকে রেজিস্ট্রার পদ থেকেও অপসারণ করা হয়।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top