আসগর সালেহী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বিএনপির দুই কেন্দ্রীয় নেতা—গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব সম্প্রতি সহিংস রূপ নিয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা বেড়েছে। এতে সাধারণ জনগণও ব্যাপকভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাঠানো হয়েছে। উভয় গ্রুপ একে অপরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও প্রবাসী ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়াসহ স্বঘোষিত কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে উপজেলা বিএনপির দুই যুগ্ম আহ্বায়ককেও শোকজ করা হয়েছে।
দীর্ঘদিনের সহিংসতা ও সংঘর্ষ গত আট মাসে রাউজানে বিএনপির এই দুই পক্ষের মধ্যে অন্তত ৩৫ বার সংঘর্ষ, হামলা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
১৪ নভেম্বর ২০২৪: নোয়াপাড়ায় গোলাগুলিতে ৭-১০ জন গুলিবিদ্ধ, আহত ২০ জন। ১৩ অক্টোবর ২০২৪: সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধ ও একজন ছুরিকাহত। ১৮ আগস্ট ২০২৪: সংঘর্ষে আহত ১২ জন। ডিসেম্বর ২০২৪: বিজয় মেলা নিয়ে মারামারিতে ৫-৬ জন আহত।
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উভয় পক্ষই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং প্রতিপক্ষের সহযোগিতা করার অভিযোগ তুলেছে। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী দাবি করেছেন, দলের একটি অংশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দলে ভেড়াচ্ছে। অন্যদিকে অপর পক্ষও পাল্টা অভিযোগ এনেছে, তারা নিজেদের রক্ষার্থে অবস্থান নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
জনদুর্ভোগ ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি অব্যাহত সংঘর্ষ ও উত্তেজনায় সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত। অনেকেই প্রাণের ভয়ে এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। সম্প্রতি রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। স্থানীয়রা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।