১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৬ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ভ্যাটিকানে নতুন পোপ নির্বাচিত, সাদা ধোঁয়ার সংকেতে উদযাপনে মেতেছে বিশ্ববাসী

নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের উপরের চিমনি দিয়ে অবশেষে বের হলো ঘন সাদা ধোঁয়া—এটি ইঙ্গিত করে যে, রোমান ক্যাথলিক চার্চ তাদের নতুন পোপ নির্বাচন করেছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) কনক্লেভের দ্বিতীয় দিনে এই প্রতীকী ধোঁয়া দেখা যায়, যা সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে অপেক্ষমাণ হাজারো তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়।

সাদা ধোঁয়া দেখা মাত্রই সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার ঘণ্টাধ্বনি বাজতে শুরু করে, যা জানিয়ে দেয় নির্বাচন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ১৩৩ জন কার্ডিনালের গোপন কনক্লেভে দুই-তৃতীয়াংশের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন পোপ। যদিও তার পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

এর আগে, ২০১৩ সালে জর্জ বারগোলিও পোপ ফ্রান্সিস নির্বাচিত হওয়ার পর সাদা ধোঁয়ার প্রায় ৪৫ মিনিট পর তিনি বারান্দায় এসে জনতার সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, এপ্রিলে ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হলে নতুন পোপ নির্বাচন জরুরি হয়ে পড়ে। এবারের কনক্লেভে বিপুল সংখ্যক কার্ডিনাল অংশ নেন, যাদের বেশিরভাগই ফ্রান্সিসের মনোনীত। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন, যার ফলে ভবিষ্যৎ পোপের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও নানা জল্পনা চলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন পোপ ফ্রান্সিসের উদারনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখতে পারেন। তবে এতে নিশ্চিত হওয়া যায় না, কারণ নতুন কার্ডিনালদের মধ্যে অনেকেই সামাজিকভাবে রক্ষণশীল দেশ থেকে এসেছেন, যেখানে উদারপন্থার বিরোধিতা প্রবল।

পোপ ফ্রান্সিসের সময়কাল ছিল সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে। তিনি অভিবাসী ও শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব, LGBTQ সম্প্রদায়ের প্রতি খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গি এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার এই কার্যক্রম অনেক রক্ষণশীল কার্ডিনালের বিরোধিতার কারণ হয়েছিল।

নতুন পোপ হিসেবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অব স্টেট পিয়েত্রো প্যারোলিন, ফিলিপাইনের সংস্কারপন্থি লুইস অ্যান্তোনিও টাগলে, হাঙ্গেরির রক্ষণশীল পিটার এর্দো, গিনির ফ্রান্সিস-বিরোধী কার্ডিনাল রবার্ট সারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থি রবার্ট প্রেভোস্ট।

তবে একটি পুরনো প্রবাদ আছে: “যিনি পোপ হওয়ার আশায় কনক্লেভে প্রবেশ করেন, তিনি কার্ডিনাল হিসেবেই ফিরে আসেন।” ২০১৩ সালে ফ্রান্সিস নির্বাচিত হওয়ার সময়ও এমনটা হয়েছিল; আলোচনায় না থেকেও শেষ পর্যন্ত তিনি পোপ হয়েছিলেন।

এই ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর, এখন বিশ্ব অপেক্ষায় রয়েছে নতুন পোপের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top