নিজস্ব প্রতিবেদক:
কাশ্মীর ইস্যুকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এবার ড্রোন অনুপ্রবেশ নিয়ে নতুন অভিযোগ তুলেছে ভারত। ভারতের দাবি, ৮ ও ৯ মে’র মধ্যরাতে পাকিস্তান লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের পশ্চিম সীমান্তজুড়ে ৩৬টি স্থানে প্রায় ৩০০-৪০০টি ড্রোন পাঠিয়েছে।
শুক্রবার (৯ মে) এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী, সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ এই অভিযোগ আনেন।
তাদের দাবি, এই ড্রোন অনুপ্রবেশের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা এবং সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো। ধরা পড়া ড্রোনগুলোর ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এগুলো তুরস্কের তৈরি ‘আসিসগার্ড সংগার’ ড্রোন।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৭ মে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে পাকিস্তান ‘অপারেশন সিদুঁর’-এর জবাবে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ব্যর্থ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এসব হামলার সময় পাকিস্তান তাদের বেসামরিক বিমান চলাচল বন্ধ করেনি বরং করাচি-লাহোর বিমানপথে চলমান বেসামরিক বিমানকে ‘ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত।
উইং কমান্ডার ভূমিকা সিংহ জানান, পাকিস্তানের একটি সশস্ত্র ইউএভি ভারতের বাঠিন্ডা সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা করে, যা সফলভাবে প্রতিহত করা হয়। জবাবে ভারতীয় ড্রোন পাকিস্তানের চারটি আকাশ প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে হামলা চালায়, যার মধ্যে একটি ড্রোন পাকিস্তানের একটি রাডার স্টেশন ধ্বংস করে।
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলওসি বরাবর ভারী কামান থেকে গোলাবর্ষণ করে এবং ড্রোন ব্যবহার করে টাংধার, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার, রাজৌরি, অখনূর ও উধমপুরে হামলা চালায়। এতে ভারতীয় সেনাদের মধ্যে কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পালটা হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীরও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ভারতের।
এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী এলাকায় এই হামলায় এক নারী নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। অঞ্চলজুড়ে ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে। সাইরেন, গোলাগুলির শব্দ আর আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
ভারতের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় দেশটির ২৮টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।