মোঃ নুর আলম পাপ্পু, সাংবাদিক
বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় আমরা প্রায়শই এমন কিছু বিতর্কে জড়িয়ে পড়ি, যেগুলোর মূলত গভীরতা নেই, কিন্তু আবেগ-উত্তেজনায় ভরপুর। এর একটি বড় উদাহরণ হলো — “পাকিস্তানকে সমর্থন করা মানেই দেশদ্রোহিতা।”
আমার প্রশ্ন হলো, কেন?
পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই ভালো-মন্দ মানুষ রয়েছে। পাকিস্তান হোক বা ভারত, এই নিয়মের ব্যতিক্রম নয়। কোনো দেশের জনগণের একটি অংশের নেতিবাচক আচরণের কারণে গোটা জাতিকে ঘৃণা করা ন্যায়সংগত নয়।
আমরা মুসলিম। আমাদের ধর্ম আমাদের শেখায় সহনশীলতা, বিবেচনা ও মানবিকতা। পাকিস্তান একটি মুসলিম দেশ — ধর্মীয় কারণে তাদের প্রতি এক ধরনের আত্মিক টান থাকা অস্বাভাবিক নয়। আবার ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যেখানে কোটি কোটি মুসলমানসহ নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করেন।
তাদের ভালোবাসতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা ঘৃণা করি সেইসব সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের যারা নিজেদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে।
সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত একটি ইতিবাচক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে শান্তি ও সহনশীলতার বার্তা ছিল। আমি বলবো, এমন ভিডিওগুলো থেকে ভারতীয় কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠীর শেখার আছে। কারণ, ভারতের অনেক ভিডিওতেও দেখা যায়— যেখানে সৌদি আরবের পতাকাকে, যেটিতে ইসলামের পবিত্র কালেমা লেখা রয়েছে, রাস্তার ময়লায় ফেলা হয়েছে। এটি কেবল সৌদি আরব নয়, বরং সমগ্র মুসলিম জাহানের প্রতি এক চরম অসম্মান।
আমরা এমন কোনো উগ্রতা, বিভেদ বা ধর্মীয় অবমাননার পক্ষে নই — দেশ যেটাই হোক না কেন।
তাই আমি বলবো, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” অথবা “ভারত জিন্দাবাদ” বলায় কারো যদি আঘাত লাগে, তবে সেটা তার শিক্ষার অভাব এবং সংকীর্ণ মানসিকতারই প্রমাণ।
দেশ নয়, বিভেদ নয় — আমরা সমর্থন করি ন্যায়বিচার, সহানুভূতি ও শান্তিকে।
ধন্যবাদ।