আসগর সালেহী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
বাংলাদেশে ‘পাকিস্তানপন্থা’ বলে কিছু নেই— এমন মন্তব্য করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ এক বিবৃতিতে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ‘ইন্ডিয়ান রেটোরিক’ বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের ভেতরে নতুন বিভেদ উসকে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মিডিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে আখ্যায়িত করে আসছে। এই প্রেক্ষাপটে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর ‘পাকিস্তানপন্থী’ ট্যাগ দেয়ার মানে হলো ইন্ডিয়ান ন্যারেটিভকে বাংলাদেশে পুনরায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে এই ধরনের ইন্ডিয়ান রেটোরিক ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ও হত্যার নজির আমরা দেখেছি। আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদ-উত্তর বাংলাদেশে সেই আত্মঘাতী পশ্চাদমুখী রাজনীতির পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। ইন্ডিয়ান রেটোরিকের যে কোনো চর্চা ‘জুলাই ঐক্যে’ নতুন বিভেদ সৃষ্টি করে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সুযোগ করে দিতে পারে। বিষয়টি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি স্বৈরতন্ত্র এবং একাত্তরের জনযুদ্ধ পর্যন্ত এদেশের আলেম-ওলামা ও মুসলমানরা সবসময় জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এরপর চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশে ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের পতন ঘটে। সাতচল্লিশ, একাত্তর এবং চব্বিশ— এই তিন ঐতিহাসিক পর্ব আমাদের সংগ্রামী ইতিহাস ও জাতীয় আত্মপরিচয়ের মূল ভিত্তি।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মুসলিমবিদ্বেষী ন্যারেটিভের বিরুদ্ধে এই ইতিহাসকে অস্বীকার নয় বরং গ্রহণ ও ধারণ করে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফ্যাসিবাদী আমলে যেভাবে ইন্ডিয়ান রেটোরিক ব্যবহার করে এদেশের ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে বিচারিক হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর কখনো হতে দেয়া যাবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে ‘পাকিস্তানপন্থা’ বলে কিছু নেই। আমরা বাংলাদেশপন্থী শক্তিশালী রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।