নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুলাই আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন খারাপ থাকলে সংগীতশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম তাকে গান শুনিয়ে সান্ত্বনা দিতেন— এমন মন্তব্যে মঙ্গলবার আদালতকক্ষে হাসির রোল পড়ে যায়। বিষণ্ন মমতাজও এজলাসে হেসে দেন।
তবে এই হাসির মুহূর্তের মধ্যেও তার বিরুদ্ধে ছিল গুরুতর অভিযোগ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানা এলাকায় মো. সাগর নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে সোমবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম শুনানিতে রিমান্ড আবেদন করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
শুনানিকালে জনাকীর্ণ এজলাসে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মমতাজ। গালে হাত দিয়ে বিষণ্ন মুখে তিনি রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনছিলেন। একপর্যায়ে পিপি ওমর ফারুক বলেন, “এই আন্দোলনের সময় যখন হাসিনার মন খারাপ থাকত, তখন তিনি হাসিনাকে গান শোনাতেন।” এই বক্তব্যে আদালতে উপস্থিতদের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এমনকি মমতাজও হেসে ফেলেন।
পরবর্তীতে আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনতে চান। কিন্তু তখন তার আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা আসামিপক্ষের দাখিল করা নথি দেখে অ্যাডভোকেট রেজাউল করিমকে খুঁজতে থাকেন।
এরপর বিচারক মমতাজকে প্রশ্ন করেন— “আপনি কি ওনাকে চেনেন? তাকে আপনার আইনজীবী হিসেবে নিতে চান?” মমতাজ কিছুটা সময় নিয়ে আইনজীবীকে শনাক্ত করেন এবং ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন।
এই মামলায় মমতাজের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। চার দিনের রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।