নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর (আইডিএফ) টানা বিমান হামলায় মাত্র ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১৫ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১৬ জন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আলজাজিরা-র।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। চলমান এই অভিযানসহ শুক্রবারের হামলা পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ১১৯ জনে। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন। নিহত ও আহতদের অন্তত ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরই জবাবে হামাসকে দমন এবং জিম্মিদের উদ্ধার করতে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইল। কিন্তু যুদ্ধবিরতির দুই মাস না যেতেই, গত ১৮ মার্চ থেকে আবারও নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে গত প্রায় দুই মাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৯৮৫ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৮ হাজার ১৭৩ জন।
হামাসের জিম্মি করে নেওয়া ২৫১ জনের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরাইল জানিয়েছে, সামরিক অভিযানের মাধ্যমেই তাদের উদ্ধারের পরিকল্পনা চলছে।
এদিকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন একাধিকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানালেও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, “হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষ করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য। লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।”
ইতোমধ্যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা দায়ের করা হয়েছে।