২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা: প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড, তিনজন খালাস

নিজস্ব প্রতিনিধি:

মাগুরার আলোচিত ৮ বছরের শিশুর ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে একই মামলার অপর তিন আসামি—শিশুটির বোনের জামাই সজীব শেখ, সজীবের ভাই রাতুল শেখ এবং তাদের মা রোকেয়া বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এই রায় ঘোষণা করেন।

মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে গত ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় আট বছরের শিশু আছিয়া। মাগুরাসহ সারাদেশে এই ঘৃণ্য ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে জনসাধারণ।

ধর্ষণের পর শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল এবং ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হলে ১৩ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আছিয়া।

এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের জামাই সজীব শেখ, সজীবের ভাই রাতুল শেখ এবং তাদের মা রোকেয়া বেগম।

পুলিশ তদন্ত শেষে ১৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। ২৩ এপ্রিল চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২৭ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২৯ জন সাক্ষ্য দেন। ১২ কার্যদিবসে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়।

বিচারিক পর্যবেক্ষণে হিটু শেখের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তি, মেডিকেল রিপোর্ট ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তবে অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, প্রধান আসামি হিটু শেখের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, মেডিকেল অ্যাভিডেন্স এবং প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দিতে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এই রায় বাংলাদেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।

রায়ের পর মাগুরার সর্বস্তরের জনগণ সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এমন নৃশংস অপরাধের উপযুক্ত বিচার হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে খালাস পাওয়া তিনজনের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top