মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
“আমার ছেলের গলাকাটা ছবিটা দেখলে কলিজা আর মানে না, নিজেকে সামলাতে পারি না। খুনিরা ভালোই আছে, আমি হইলাম ছেলে হারা।” — এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কুমিল্লার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী নিহত ফারুক আহাম্মেদ রাজুর মা ফাতেমা বেগম।
২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর রাতে পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে চাচাতো ভাই, ভগ্নিপতি ও বন্ধুরা মিলে নির্মমভাবে হত্যা করে ফারুককে। গলা কেটে মাথা আলাদা করে সেফটিক ট্যাংকে ফেলে, আর দেহ চাপা দেওয়া হয় মাঠের বালুর নিচে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
মুরাদনগর থানায় নিহতের বাবা গোলাম মোস্তফা একটি হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই আদালত ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন—রফিক (২৫), নাজমুল সিকদার (২০), মান্নান (২৭) ও সুমন (২৮)। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো আসামিরা কেউ ধরা পড়েনি।
নিহত ফারুকের প্রবাসী ভাই মাসুম রানা বলেন, “১২ বছর ধরে ভাইহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছি। আদালত রায় দিলেও পুলিশের ব্যর্থতায় একজন আসামিকেও গ্রেপ্তার করা যায়নি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ চাই, যেন দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।”
এ হত্যাকাণ্ডে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ গ্রামে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় ফারুকের মা ফাতেমা বেগম, বাবা মোস্তফা সরকারসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। ওয়ারেন্ট অফিসারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।