নিজস্ব প্রতিবেদক:
যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শিক্ষা সফটওয়্যার কোম্পানি ‘পাওয়ার স্কুল’-এর সাইবার নিরাপত্তা ভেঙে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের গোপন তথ্য চুরির ঘটনায় ম্যাসাচুসেটসের ১৯ বছর বয়সি তরুণ হ্যাকার ম্যাথিউ লেন দোষ স্বীকার করেছেন। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফেডারেল আদালতে ম্যাথিউ স্বীকার করেন, তিনি ও তার সহযোগীরা শিক্ষার্থীদের নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ ও সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বারসহ গোপন তথ্য চুরি করে ২.৮৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বিটকয়েনে মুক্তিপণ দাবি করেছিলেন।
‘পাওয়ার স্কুল’ সফটওয়্যার ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৮ হাজার স্কুলের ছয় কোটির বেশি শিক্ষার্থী এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। ফলে এই হ্যাকিংয়ের প্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ ও বিস্তৃত।
প্রসিকিউটরদের মতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লেন ‘পাওয়ার স্কুল’-এর এক কন্ট্রাক্টরের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অবৈধভাবে কোম্পানির সিস্টেমে প্রবেশ করেন। এরপর ডিসেম্বরের শেষে চুরি করা তথ্য ইউক্রেনের একটি ক্লাউড সার্ভারে স্থানান্তর করা হয়।
লেন ও তার সহযোগীরা হুমকি দেন, যদি কোম্পানি দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ না দেয়, তাহলে তারা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবেন। এই তথ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত পরিচিতির গুরুত্বপূর্ণ উপাত্ত, যা পরিচয় চুরি ও আর্থিক জালিয়াতির জন্য মারাত্মক হুমকি।
পাওয়ার স্কুল ২০২৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর এই হামলার বিষয়ে প্রথমবার জানতে পারে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার করেছে, তবে মুক্তিপণ পরিশোধ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ফেডারেল তদন্তে আরও জানা যায়, ম্যাথিউ লেন ও তার দল একই পদ্ধতিতে একটি টেলিকম কোম্পানির ডেটাও চুরি করেছিল।
লেন বর্তমানে সাইবার অপরাধ, পরিচয় চুরি এবং অননুমোদিত প্রবেশের অভিযোগে মামলার সম্মুখীন। তার কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হামলার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।