রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার টেকনোলজির ১ম সেমিস্টারে পড়ুয়া এক নারী শিক্ষার্থী পলিটেকনিকের আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুরের অধিবাসী মহিলা পলিটেকনিকের আবাসিক থেকে নিখোঁজ হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম রিমু আক্তার রিম। তিনি পলিটেকনিকের রুপসী বাংলা ছাত্রীনিবাসের ৩০৭ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী।
পরিবার সূত্র থেকে জানা যায়, গত ২০ মে ২০২৫ মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট থেকে পরদিন সকাল ৭টার মধ্যে ওই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার আগে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট রিমু তার মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। রিমু বলেন, মা আমি বড় আপুর সাথে নিচে নামতেছি। আবার উপরে ফিরে এসে তোমাকে কল দিব। নিচে ফোন ব্যবহার করা যায় না।
১০ মিনিট পরে রিমু নিজেই তার মাকে ফোন দেন এবং ফোন শুধু বলেন – মা। এর পরেই কেউ একজন তার ফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেন।
এর পর নিখোঁজ রিমুর মা রাত ৯ টা পর্যন্ত তার মেয়ের মোবাইলে কল দিয়ে বন্ধ পান। পরে তিনি রিমুর সাথে হোস্টেলে থাকা অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে ফোনে কথা বলেন। তারা বলেন – আপনার মেয়েকে তো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। জবাবে রমিুর মা বলেন – আমি আপনাদের কে না জানালে তো আপনারা আমাকে জানাতেন না, এটা কেমন হলো?
এ ঘটনায় হোস্টেল সুপার তানিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে, তানিয়া রিমুর মাকে কোন প্রকার সহযোগিতা বা তথ্য না দিয়েই ফোনেই রিমুর মাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি-গালাজ করে রিমু খুঁজে আনতে বলেন। তানিয়া বলেন, আপনার মেয়েকে খুঁজে নিয়ে এসে হোস্টেলের সিট কাটিয়ে নিয়ে যান।
জবাবে ভুক্তভোগী রিমুর মা হোস্টেল সুপার কে বলেন, আমি আপনাদের কে দায়িত্ব দিয়ে আসছি। আপনার অনুমতি ছাড়া কেউ বের হতে পারে না। আমি খুঁজে নিয়ে আসবো মানে?
২১ তারিখ সকালে রিমু মা মহিলা পলিটেকনিকের আবাসিক হোস্টেল যান। গিয়ে দেখেন নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীর বিষয়ে হোস্টেল প্রশাসন নীরব। নিখোঁজ রিমুর বিষয়ে কোন তথ্য না দিয়েই তারা বলেন, কলেজ ড্রেস পড়া কোন মেয়ে যখন হারিয়ে যায় বা পালিয়ে যায় তখন আমাদের কোন দায়ভার থাকে না।
হোস্টেল প্রশাসন বিশেষ করে হোস্টেল সুপারের এমন আচরণ বেশ রহস্যজনক। আাবাসিকের একজন শিক্ষার্থী নিখোঁজ – তারা জানার পরও অভিভাবক বা পুলিশ কে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি।
নিখোঁজ রিমু মা রিমুর বিষয়ে কোন তথ্য হোস্টেল থেকে না পেয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় যোগাযোগ করে জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন। জিডি নম্বর ১৭১৮।
শেরেবাংলা নগর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীকে খুঁজে বের করতে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।