নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম একটি কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুন কারিব”— অর্থাৎ “আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় নিকটবর্তী”। এটি কোরআনের সুরা : সফ-এর ১৩ নম্বর আয়াত।
এই সংক্ষিপ্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ বাক্যটি বিজয়ের আশাবাদ এবং সংকটময় সময়ে আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। গভীর রাতে প্রকাশিত এই স্ট্যাটাসকে অনেকেই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের বার্তা বা অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন।
এই স্ট্যাটাসের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার ঝড় উঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের বক্তব্য অন্তর্বর্তী সময়ের বাস্তবতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রকাশ করে।
এর আগেও অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা ও রাজনীতিকদের পক্ষ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যাটাস দেখা গেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও একই দিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিভাজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, “যে বিভাজনটা অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেই বিভাজনকে দেশ ও জাতির স্বার্থে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই এক হয়েছিলাম বলেই দীর্ঘ দেড় যুগের শক্তিশালী ফ্যাসিবাদকে তছনছ করতে পেরেছিলাম। যদি আমরা খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাই, তাহলে পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তার দেশি-বিদেশি দোসরেরা আমাদের তছনছ করার চেষ্টা করবে।”
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বিকেলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে লেখেন, “দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য অনিবার্য। আগেকার বিভাজনমূলক বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত। সরকারে থাকলে সম্মান ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে কাজ করব।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ ও আগ্রাসী। সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। দেশপ্রেমিক জনগণ এখন পরীক্ষার মুখোমুখি। এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের।”
প্রবীণ রাজনীতিকদের এমন ধারাবাহিক বার্তা ও আত্মসমালোচনার ভেতর দিয়ে স্পষ্ট হচ্ছে— বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বৃহৎ ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়াস চলছে। সেই সঙ্গে জনগণের প্রতি আস্থা ও নেতৃত্বের দায়বদ্ধতার নতুন ইঙ্গিত মিলছে এসব বার্তায়।