মাহমুদুর রহমান নাঈম, ঢাকা প্রতিনিধি:
আজ ২৩ মে শুক্রবার সকাল ০৯ টায় ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিদওয়ান মাযহারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পাঠাগার সম্পাদক ইনআমুল হাসান নাইমের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি হযরত মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জমিয়তের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, ইউনিফর্ম পরিহিত রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়াকে অনুচিত বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র রক্ষাকারীদের নিরপেক্ষ থাকা উচিত। তারা যদি ইউনিফর্ম পরে রাজনৈতিক আচরণ করেন বা অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন, তবে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ব্যাহত হবে এবং অনধিকার প্রবেশের সংস্কৃতি জন্ম নেবে। তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি জনগণের আস্থা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্বে থাকেন, তাহলে তাঁর কাজ হওয়া উচিত ন্যায় ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা; কিন্তু তিনি যদি চিৎকার-চেচামেচি করেন, তাহলে তা দায়িত্ব পালনের মধ্যে পড়ে না। প্রধান উপদেষ্টাকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, যাকে সংস্কারের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তিনি আজ পর্যন্ত শুধু সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু বাস্তব কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেননি। বহু আলিম-উলামা মৃত্যুবরণ করলেও তাঁদের কোনো তালিকা তৈরি বা যথাযথ সম্মানজনক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি বিজাতীয় সংস্কৃতি ও অনৈসলামিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন এবং বলেন, সংস্কারের নামে অনৈসলামিক সংস্কৃতি প্রবর্তন কখনো সঠিক সংস্কার হতে পারে না।
পরিশেষে তিনি সকলের প্রতি নিষিদ্ধ ও বিভ্রান্তিকর পথ পরিহার করে ইসলামি নীতি ও সঠিক পথ অনুসরণ করার আহবান জানান।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী ছাত্র জমিয়তের নবনির্বাচিত প্যানেলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আপনাদের সামনে যে রোডম্যাপ রয়েছে, তা বাস্তবায়নে দৃঢ়তা, শৃঙ্খলা ও আনুগত্যই হবে প্রধান শক্তি। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কোনোভাবেই সংকল্পের ঘাটতি কিংবা দায়িত্ব পালনে সীমালঙ্ঘন চলবে না। সংগঠনের নীতি ও আদর্শের প্রতি শতভাগ আনুগত্যই সদস্যের পরিচয় বহন করে।”
তিনি দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে বলেন, “কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তি পূজা বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি সংগঠনের স্বার্থবিরোধী। মূল দলের প্রতি অবিচল শ্রদ্ধা ও নিরঙ্কুশ আস্থাই আমাদের আদর্শিক পথচলার চালিকাশক্তি হওয়া উচিত।”
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা প্যানেলের সকল সদস্যকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে একটি নিরপেক্ষ, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অতি জরুরি। সে লক্ষ্যে আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন এবং প্রয়োজনীয় সকল রাষ্ট্রিক সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য।”
উক্ত সদস্য সম্মেলন ও কাউন্সিলে আরো উপস্থিত ছিলেন জমিয়তের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা শোয়াইব আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল হক কাওসারী, সরকারী মহাসচিব মাওলানা জয়নুল আবেদীন, মুফতি মকবুল হোসাইন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাযহারী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি নাছিরউদ্দিন খান, মাওলানা গাজী ইয়াকুব উসমানী, প্রচার সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, সহকারী অর্থ সম্পাদক মাওলানা আবুল বাশার, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতি জাবের কাসেমী তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা শারফুদ্দিন ইয়াহইয়া, সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা নজরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান। যুব জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল।