মাহমুদুর রহমান নাঈম, ঢাকা প্রতিনিধি:
কুরবানির ঈদ মুসলমানদের একটি পবিত্র এবং তাৎপর্যপূর্ণ উৎসব। এই দিনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কুরবানি করেন, যার মাধ্যমে আত্মত্যাগ ও ত্যাগের মহিমা প্রকাশ পায়। কুরবানির পশুর মাংস যেমন দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়, তেমনি পশুর চামড়া দান করা হয় মসজিদ, মাদ্রাসা বা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘদিন ধরে এই চামড়ার অর্থ দিয়ে দেশের হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসা তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গরুর চামড়ার দাম আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠান ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে।
চামড়ার দাম এতটাই কমে গেছে যে, অনেক এলাকায় লোকজন চামড়া বিক্রি তো দূরের কথা, মাটিতে পুঁতে ফেলা বা খালে ফেলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। ফলে মাদ্রাসাগুলো সেই চামড়ার অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে মুহতামিমগণ মাদ্রাসার দৈনিক খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক সময় ছাত্রদের খাবার, শিক্ষকদের বেতন কিংবা পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহের কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশের ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা গভীর সংকটে পড়তে পারে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সমাজের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে। কুরবানির চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যেন মাদ্রাসার উপকারে আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে, সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের উচিত সরাসরি মাদ্রাসাগুলোতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।কুরবানির প্রকৃত শিক্ষা কেবল পশু কোরবানিতে নয়, বরং তা হচ্ছে আত্মত্যাগ ও সহযোগিতায় — যা বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবি।