মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
মুরাদনগরের রাজনৈতিক মঞ্চে এখন নেমেছে অন্ধকার। এক সময়ের নীতিনিষ্ঠ ও গণমুখী রাজনীতি আজ রূপ নিয়েছে আদর্শহীন দখলদারিত্বে, যেখানে প্রাধান্য পাচ্ছে ব্যক্তি-স্বার্থ, গোষ্ঠীগত আধিপত্য আর প্রশাসনিক সুবিধাভোগ। সাধারণ জনগণের কণ্ঠে ঘুরপাক খাচ্ছে ক্ষোভ আর হতাশা—তারা বলছেন, “এটা তো আর রাজনীতি নয়, এটা এখন ক্ষমতা দখলের কলুষিত খেলা।”
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, রাজনীতির মাঠে এখন মুখ্য ভূমিকা নিচ্ছেন একদা বিএনপি ঘরানার ‘রং বদলানো’ নেতারা এবং এনসিপির ব্যানারে ওঠে আসা কিছু বিতর্কিত মুখ। যাদের রাজনৈতিক অতীত নানা প্রশ্নবিদ্ধ অধ্যায়ে মোড়ানো। আদর্শ নয়, তাদের চালিকাশক্তি এখন ‘কীভাবে দখলে রাখা যায় মাঠ’, আর ‘কার পেছনে আছে কতটা প্রশাসনিক ছায়া’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, “আমরা একসময় মুরাদনগরে বিশ্বাস করতাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়—আজ তা শুধুই শব্দে সীমাবদ্ধ। মাঠে আছে দলবাজি, লবিং, আর ছদ্মবেশী দালালতন্ত্র।”
উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে উন্নয়ন কার্যক্রম কার্যত অচল। প্রকল্প শুরু হয়, থেমে যায় মাঝপথে। অনেক জনপ্রতিনিধি রাজনীতিক প্রতিপক্ষের চাপে মুখ খুলতেও ভয় পান। প্রতিশ্রুত উন্নয়ন আজ ‘প্রশাসনিক পক্ষপাত’ আর ‘নির্বাচনী দণ্ডনীতি’র জালে বন্দী।
একজন যুবক বলেন, “শুধু পদ আর প্রভাব থাকলেই এখন নেতা হওয়া যায়। সাধারণ মানুষের কথা বললেই হয় বিপদের কারণ। আমরা চেয়েছিলাম মানুষের মুরাদনগর, এখন দেখছি পুঁজির ও পৃষ্ঠপোষকতার মুরাদনগর।”
জনগণের স্পষ্ট দাবি—এখন প্রয়োজন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, আদর্শভিত্তিক এবং ন্যায়ের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। যেখানে মতের ভিন্নতা থাকবে, তবে উন্নয়নের প্রশ্নে সবাই এক কণ্ঠে কথা বলবে।
মুরাদনগরের মানুষ আর চায় না দালালতন্ত্রের ছায়া। তারা চায়—একটি মানবিক, শান্তিপূর্ণ, এবং ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক প্রজন্মের উন্মেষ।