১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভাঙ্গুড়ায় নৈশ্য প্রহরী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন: গ্রেফতার দুই কিশোর

খালিদ হোসেন হৃদয়, ভাঙ্গুড়া, পাবনা, প্রতিনিধি:

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সি.কে.বি. আলীম মাদ্রাসার নৈশ্য প্রহরী আব্দুল গনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় অবশেষে রহস্যের জট খুলেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বৃদ্ধমরিচ গ্রামের মোঃ জেলহক প্রামাণিকের পুত্র মোঃ হাবিব (১৪) ও চন্ডিপুর গ্রামের মোঃ আছমত আলী পুত্র মোঃ আহম্মাদ আলী (১৬)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) জনাব আরজুমা আখতার জানায়, গত ৯ জুন রাতে আনুমানিক ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে ১০ জুন রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে মাদ্রাসার নিজ কক্ষে নৈশ্য প্রহরী আব্দুল গনিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, চোয়াল, পিঠ এবং ডানহাতের কব্জিতে আঘাত করে হত্যা করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে সিরাজগঞ্জ শহীদ মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১০ জুন সকাল ৯টার দিকে তিনি মারা যান।

ঘটনার পরের দিন, ১১ জুন ভাঙ্গুড়া থানায় হত্যা মামলা (নং- ০৬/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড) রুজু করা হয়। পাবনার পুলিশ সুপার মোঃ মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশনায় এবং সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) জনাব আরজুমা আখতার এর তত্ত্বাবধানে তদন্ত শুরু করে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঐ দুই কিশোরকে গ্রেফতার করে, যারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয় এবং তাদের আদালতে হাজির করা হলে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।
তদন্তে জানা যায়, নিহত আব্দুল গনি ছিলেন হাবিবের পূর্বপরিচিত ও আত্মীয়সুলভ সম্পর্ক ছিল। হাবিব মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় রাত্রী যাপন করত এবং জানত যে ভিকটিম নিজের কাছে টাকা-পয়সা রাখেন। সেই লোভ থেকেই বন্ধু আহম্মাদ আলীর সঙ্গে টাকা ছিনিয়ে নিতে হত্যার পরিকল্পনা করে। ৯ জুন রাতে দুজন মাদ্রাসার পাশে ফুটবল মাঠে বসে ডেন্ডি (গাম) সেবন করে এবং পরে মাদ্রাসার কক্ষে প্রবেশ করে আব্দুল গনিকে নির্মমভাবে আঘাত করে হত্যা করে।

ঘটনার পর হাবিব ভিকটিমের ছেলেকে ফোন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয় এবং নিজেই ঘটনাস্থলে যায়। অপর অভিযুক্ত আহম্মাদ আলী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত দা ও ছেনি জব্দ করে।

এই ঘটনায় ভাঙ্গুড়াবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ও সফল অভিযানে এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

 

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top