১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হাসিনার বাবুর্চির সম্পদের পাহাড়! জমি দখল ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসায় দীর্ঘ ২৮ বছর বাবুর্চির দায়িত্ব পালন করা মোশারফ শেখ এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার একজন সাধারণ দিনমজুরের ছেলে থেকে তিনি কিভাবে প্রভাবশালী হয়ে উঠলেন—তা ঘিরে সম্প্রতি উঠেছে নানা অভিযোগ।

শেখ হাসিনার শাসনামলে তার আশপাশে থাকা অনেকেই হঠাৎ করে সম্পদের মালিক হয়েছেন—এমন বক্তব্য তিনি নিজেই প্রকাশ্যে বলেছেন। এবার আলোচনায় উঠে এসেছেন তার বাবুর্চি মোশারফ শেখ।

মোশারফের উত্থান ও বিতর্ক

১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার বাসায় বাবুর্চির চাকরি পান মোশারফ শেখ। এর আগে তিনি স্থানীয় একটি হোটেলে রান্নার কাজ করতেন। এরপর থেকে তার আর্থিক অবস্থার劇 নাটকীয় উন্নতি ঘটে। নিজ এলাকা ফরিদপুরের সালথায় প্রায় ২ বিঘা জমির ওপর বিলাসবহুল বাড়ি, ফরিদপুর শহরে দুটি বাড়ি, ঢাকায় ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ি—সবই রয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

তবে বিতর্ক শুরু হয় সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ ওঠার পর। বড় কামদিয়া গ্রামের কৃষক চাঁনমিয়া ফকিরের ছেলে সাগর মিয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে মোশারফ তাদের ৪৩ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। প্রতিবাদ করলে হুমকি, মারধর এবং মামলা দিয়ে পরিবারসহ এলাকাছাড়া করার চেষ্টা করেন।

চাঁনমিয়ার ভাতিজা সেন্টু ফকির জানান, বাবুর্চির প্রভাব দেখিয়ে মোশারফ পুরো গ্রামে দাপট চালাতেন। স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও সহযোগিতা পাননি তারা।

প্রতিবেশীদের দাবি: সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মোশারফ

প্রতিবেশী জামাল শেখ বলেন, বাবুর্চির চাকরির পর থেকেই মোশারফের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসে। গ্রামের বাইরে ফরিদপুর শহরে ও ঢাকায় একাধিক সম্পত্তি ও গাড়ি রয়েছে। এমনকি নিজের মুখেই তিনি বলেছেন, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০০ কোটিরও বেশি।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, তদন্তের আশ্বাস পুলিশের

অভিযোগের বিষয়ে মোশারফ শেখের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এমনকি তার বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, জমি দখলের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমানে মোশারফ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্ত শুরু হলে মোশারফ শেখের বিপুল সম্পদের উৎস ও আচরণের বিষয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top