২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রাম বন্দরে যুক্ত হচ্ছে আরও ৬ লাইটার জেটি

চট্টগ্রাম বন্দর অপারেশনে যুক্ত হচ্ছে আরও ছয়টি লাইটার জেটি। পতেঙ্গা লালদিয়ার চরের পাশে নিজেদের জায়গায় লাইটার জেটিগুলো করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব জেটি অপারেশনে ঠিকাদার নিয়োগের কার্যক্রমও শেষ পর্যায়ে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাইটার জেটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা যেমন বাড়বে তেমনি সম্প্রসারণ হবে ব্যবসা-বাণিজ্যের। বিশেষ করে এসব জেটি ব্যবহার করে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সুফল পাবেন। এতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘লালদিয়া চরের পাশে বন্দরের নিজস্ব জায়গায় নতুন করে ছয়টি লাইটার জেটি করা হচ্ছে। ডেভেলপ করা হচ্ছে পুরো জায়গাটি। এরই মধ্যে পুরো ইয়ার্ড নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। যারা লাইটার জেটি অপারেশনের জন্য মনোনীত হবেন, তারা আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে তাদের অপারেশন শুরু করবেন।’

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে লাইটার জেটি নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ছয়টি জেটির জন্য আলাদা আলাদা দরপত্র জমা হয়েছে। এর মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে সর্বোচ্চ দরদাতা ছয় প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করার কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে।’

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দর সড়কের পতেঙ্গা ইনকনট্রেড কনটেইনার ডিপোর পেছনে লালদিয়ার চরের উদ্ধার করা জায়গার পাশে বন্দরের নিজস্ব ১৯ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ একর জায়গায় ছয়টি লাইটার জেটির কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকা দরপত্রে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে এরই মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্লক নম্বর-১ এর জন্য ৬ কোটি ৫ হাজার টাকায় ওমেরা ফুয়েলস লিমিটেড, ব্লক নম্বর-২ এর জন্য ৬ কোটি ৮ হাজার টাকায় ইস্ট কোয়েস্ট ট্রেডিং (প্রা.) লিমিটেড, ব্লক নম্বর-৩ এর জন্য ৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় এস এস ট্রেডিং, ব্লক নম্বর-৪ এর জন্য ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, একই দরে ব্লক নম্বর-৫ এর জন্য জিপিএইচ ইস্পাত এবং ব্লক নম্বর-৬ এর জন্য সর্বোচ্চ ৭ কোটি ১৩ লাখ টাকায় এন মোহাম্মদ ট্রেডিং করপোরেশনকে মনোনীত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ব্লকে পেট্রোলিয়াম জ্বালানি খালাসের জেটি হবে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো স্ক্র্যাপ, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি করা পণ্য খালাস করবে।

বন্দর সূত্র জানায়, প্রতিটি লাইটার জেটির জন্য প্রায় ২ দশমিক ৫ একর জায়গা বরাদ্দ রাখা রয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেক জেটির জন্য নদীর মুখে ৭১ মিটার জায়গা রাখা হয়েছে। যেখানে পন্টুন স্থাপন করে জাহাজের পণ্য খালাস করবে ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি পণ্য খালাস করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানকে সংযোজন করতে হবে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে আইকনিক প্রজেক্ট বে-টার্মিনাল প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে থেকে লালদিয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল করার উদ্যোগ নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালের লালদিয়া টার্মিনাল প্রকল্পটি মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে নানান জটিলতার সম্মুখীন হয় বন্দর। ওই জায়গা দীর্ঘদিনের পুরোনো অবৈধ বসতি ছিল বড় প্রতিবন্ধক। তবে ২০২১ সালের প্রথম দিকে লালদিয়া চরের ১৭শ অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করে পুরো জায়গা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top