তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জ শহরের প্রতিটি মহল্লা ও পাড়া-গ্রাম এখন মশার দখলে। দিনের বেলায়ও মশার কামড়ে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। কিন্তু এত ভয়াবহ পরিস্থিতির পরেও পৌরসভার পক্ষ থেকে মশা নিধনে নেই তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
তবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দাবি, লোকবল ও ফগার মেশিন এবং পাওয়ার স্রের সংকট থাকায় মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নাগরিকদের অভিযোগ, পৌরসভা মাঝে মাঝে লোক দেখানো ফগার মেশিন চালালেও সেটি নিয়মিত বা পর্যাপ্ত নয়। অধিকাংশ সময় তা হয় নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধ। অনেক এলাকায় বছরের পর বছর কোনো স্প্রে কিংবা ফগার প্রয়োগ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসেম বলেন, “রাতে ঘুমাতে পারি না মশার জন্য। বাচ্চাদের ডেঙ্গুর সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ পৌরসভা কোনো স্প্রে দেয় না।” একই অভিযোগ করেছেন বাজার এলাকার ব্যবসায়ী, স্কুল শিক্ষক ও দিনমজুররাও।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতা, ময়লা-আবর্জনার সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকা ও পানি জমে থাকা মশা জন্মানোর প্রধান কারণ। কিন্তু এসব নিয়ন্ত্রণে পৌরসভা বরাবরই উদাসীন।
স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ ইমরান জানান, “গত এক মাসেই ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শতাধিক রোগী। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পৌরসভা প্রতিবছর বাজেটে মশা নিধনের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে, কিন্তু সেই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনসাধারণের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌরসভা কর্মকর্তা বলেন, “সামান্য কিছু স্প্রে ও ফগিং হয়, কিন্তু জনবল সংকট ও তদারকির অভাবে কাজগুলো নিয়মিত করা সম্ভব হয় না।
স্থানীয়দের দাবি, মশা নিধনে নিয়মিত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগিং, স্প্রে ও জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। না হলে এই মশা জনস্বাস্থ্যকে আরও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মৌসুমি মাহাবুব বর্তমানে পৌর প্রশাসক জানান, স্রে মেশিন কেনার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। তাছাড়া পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাইকিং করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় মশা নিধনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবো।