নিজস্ব প্রতিনিধি:
নওগাঁর বদলগাছী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদ নিয়ে চলমান দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত ২৯ জুন কলেজে সংঘটিত এক অপ্রীতিকর ঘটনায় অধ্যক্ষ মাহবুব আলমের পাশের চেয়ারে বসে পড়েন জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ইমামুল হোসেন, যিনি নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করে অধ্যক্ষকে চেয়ার ছাড়তে বলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, যা পরবর্তীতে শিক্ষকদের মধ্যে চেয়ার দখলের লড়াইয়ে রূপ নেয়।
ঘটনার পটভূমি জানতে গিয়ে দেখা যায়, গত বছর ২৭ আগস্ট অধ্যক্ষ মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে এবং তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরে অ্যাডহক কমিটি গঠিত হলে সভাপতি লুৎফর রহমান সহকারী অধ্যাপক মমতাজ জাহানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেন, যা নিয়মবহির্ভূত বলে প্রতীয়মান হয়। মাহবুব আলমের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটি পুনর্গঠন করে এবং ৮ মে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে পুনরায় অধ্যক্ষ পদে বহাল করে।
কিন্তু ইমামুল হোসেন দাবি করেন, হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশনের ফলে বর্তমান অ্যাডহক কমিটি স্থগিত হয়েছে এবং পূর্ববর্তী কমিটি তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে। তবে অধ্যক্ষ মাহবুব আলম এ দাবি খারিজ করে বলেন, “হাইকোর্ট শুধু তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে। রিটের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত পূর্ববর্তী কমিটি কীভাবে নিয়োগ দিতে পারে?”
এদিকে, কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, এই দ্বন্দ্বের কারণে নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ ফিরে পেতে চান। অ্যাডহক কমিটির বর্তমান সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, “আদালতের রায়ের আগেই চেয়ার দখলের এই লড়াই অগ্রহণযোগ্য।”
উল্লেখ্য, রিট আবেদনকারী সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগম ইতোমধ্যে মারা গেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২৬ মে অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়েছে বলে জানা গেছে, যদিও পূর্ববর্তী কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই কলেজ প্রশাসনে চলছে নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন।