মোঃ মাঈনুউদ্দিন বাহাদুর, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের ছেলে হাবিব রহমান এখন নতুন করে আলোচনায়। ৪৪তম বিসিএসে পোস্টাল ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হলেও সেই সরকারি চাকরিতে যোগ না দিয়ে তিনি বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তার পথ। নিজের গ্রামের মতোই দেশের কৃষি খাতকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
গ্রামের মাদ্রাসা থেকে এসএসসি শেষ করে হাবিব ঢাকায় চলে আসেন উচ্চশিক্ষার জন্য। নটর ডেম কলেজে এইচএসসি শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে। সেখান থেকে চার বছরের অনার্স শেষ করে পরবর্তী সময়ে আইবিএ থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনের শুরুতে তারও স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার, বিশেষ করে ফরেন ক্যাডার হওয়ার ইচ্ছা ছিল প্রবল। পরিবারের চাওয়াও ছিল একইরকম। তবে আইবিএতে পড়তে গিয়ে তিনি বুঝে যান, স্বাধীনভাবে কিছু করার জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার বিকল্প নেই।
শৈশব থেকেই কৃষির প্রতি তার আলাদা আগ্রহ ছিল। তাই হালাল পথে আয় এবং দেশের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে কৃষি খাতকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। হাবিবের মতে, কৃষি খাত সবসময় টিকে থাকবে, আর নতুন প্রযুক্তি বা এআই এর কারণে এই খাত হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা নেই। কৃষি ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে আড়াই মাস চাকরি করার অভিজ্ঞতাও তাকে বুঝিয়ে দেয় নিয়মিত চাকরির রুটিন জীবন তার জন্য নয়।
এখন হাবিব ‘রুপাই অ্যাগ্রো’ নামে একটি কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কয়েকটি ছোট ছোট প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি। কৃষি পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং দেশ-বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের কৃষি খাতকে আমদানি নির্ভরতা থেকে রপ্তানি নির্ভর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান।
কৃষি উদ্যোক্তা ছাড়াও অনলাইন জগতেও হাবিবের সক্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। ‘জয়েন ইংলিশ’ নামে তার একটি প্ল্যাটফর্ম ইতিমধ্যে লাখখানেক মানুষের কাছে পৌঁছেছে। এখান থেকে আসা আয় দিয়েই কৃষি খাতে গবেষণা ও কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তিনি। আগামী মাস থেকে পুরোপুরি নিজের কৃষি উদ্যোগে মনোনিবেশ করতে যাচ্ছেন হাবিব রহমান। নিয়মিত চাকরি ছেড়ে নিজের গ্রামের শিকড় ছুঁয়ে দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাওয়া এই তরুণ এখন অনেকের কাছে অনুপ্রেরণার আরেকটি নাম।