জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলায়, অবিরাম বর্ষণ ও উপচেপরা জোয়ারের পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকশ’ হেক্টর জমির আউশ ধান এবং আমন বীজতলা।
৫দিনের টানা বর্ষণে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মাঠ-ঘাট ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। শনিবার (৫ জুলাই) রাতে লেবুখালী ফেরীঘাটের পশ্চিমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা ভেরিবাঁধের ২/৩টি পয়েন্টে বাঁধ ধসে পানি প্রবেশ করে ওই এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ৫-৬ ফুট উচ্চতার পানিতে ওইসব এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে।
বৃষ্টির পানিতে মাঠ-ঘাট ফসলি জমি তলিয়ে থাকায় বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েকশ’ হেক্টর জমির আউশ ধান এবং আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশীরভাগ বীজতলাই ২/৩ফুট পানির নীচে চলে যাওয়ায় ক্ষেতের বীজ নস্ট হওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের। এ ছাড়া লোহালিয়া নদীর বৃদ্ধি পাওয়া জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বগা ও চরগরবদি ফেরীঘাটের গ্যাংওয়ে।
জোয়ারের সময় ঘাটের পন্টুনসহ আশপাশ ডুবে যায়। ৫-৬ ফুট পানি থাকায় কোন যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারছে না। ফলে জোয়ারের সময় বাউফল-দুমকি-পটুয়াখালী ও বরিশালসহ বিভিন্ন রুটের যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্নের সৃষ্টি হয়েছে। দূর পাল্লার পরিবহন কোন মতে সাতরে পারাপার হলেও ছোট খাটো যানবাহন ফেরীতে ওঠতে না পারায় ৩/৪ঘন্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। এতে অবর্ননীয় ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে ওইসব আভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহন গুলোর। এদিকে দিনরাত টানা বৃষ্টি আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারনে জনজীবনে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।
দুমকী গ্রামের কৃষক ছালাম মুনসী, চরবয়ড়া গ্রামের কৃষক, বাবুল,বসির, জানায়, জলাবদ্ধতায় তাদের সবগুলো আমনের বীজতলা ২/৩ফুট পানিতে তলিয়ে আছে। এতে আমনের বীজ সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা। একই অভিযোগ, শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক জাফর, দুলাল সহ অনেকের।
চরগরবদি ফেরিঘাটের কৃষক সেরাজ জানান জানান, লোহালিয়া নদীর উপচেপড়া জোয়ারের পানিতে ফেরীঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরী পারাপারে বিঘ্ন ঘটছে । দূরপাল্লার পরিবহন বাস কোনমতে ফেরীতে ওঠতে সক্ষম হলেও মাইক্রো, পিকআপসহ ছোট ছোট যানবাহন পারাপারে মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। ভাটায় পানি কমে গেলে পারাপার হতে হয়। এতে যাত্রীসহ সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভেগি পোহাতে হচ্ছে।