নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) ভারতীয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর চারজন কর্মকর্তা শিক্ষকতা করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। দেশের একটি সংবেদনশীল সেনানিবাসের অভ্যন্তরে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানে বিদেশি সামরিক ব্যক্তিদের নিয়োগ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এমআইএসটির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল অরিন্দম চ্যাটার্জি এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার টি গোপি কৃষ্ণ কর্মরত। অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভারতীয় বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন সিদ্ধার্থ শঙ্কর পাটনায়েক ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এন সোমান্নাও শিক্ষকতা করছেন।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, “শেখ হাসিনার আমলে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুপ্রবেশ করেছিল। বর্তমানে তাদের উপস্থিতি পুনর্বিবেচনা করা জরুরি।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, এসব কর্মকর্তাদের নিয়োগের শর্তাবলী এবং বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা কি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার।
এমআইএসটির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোহাম্মদ নাসিম পারভেজের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ভারতীয় গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৩ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সাম্প্রতিক তদন্তে দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতে ভারতীয়দের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
এমআইএসটি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের অধিভুক্ত হলেও প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে। এমন সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানে বিদেশি সামরিক ব্যক্তিদের উপস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা এখনই মূল্যায়নের দাবি রাখে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: দৈনিক আমার দেশ