মোঃ জাহিদুল হক, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
ছেলে মেয়ে বিভেদ নাই – সবার জন্য শিক্ষা চাই শ্লোগানকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম। অথচ গায়েবী শিক্ষার্থী দিয়েই চলছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মেছড়া ইউনিয়নের শহীদ আহসানুল হাবীব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটেছে এমন ভুতুরে কান্ড। সিরাজগঞ্জ অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিমের অনুসন্ধানে উঠে আসে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এমন ভয়াবহ চিত্র।
বিদ্যালয়টি নদী ভাঙ্গন এলাকায় অবস্থিত হওয়ার কারনে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নৌকার মাধ্যম হওয়ায় বিদ্যালয়টি চলে মাত্র ৩ ঘন্টা। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। নদী প্রবন এলাকা হওয়ায় এখানকার শিক্ষকরা সরকারী সকল বিধি অমান্য করে চালাচ্ছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।
যেখানে ৪ জন শিক্ষক থাকা স্বত্ত্বেও সরেজমিনে পাওয়া যায় মাত্র একজন সহকরী শিক্ষিকাকে পাওয়া যায়নি প্রধান শিক্ষককেও। বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে ১০৩ জন শিক্ষার্থী থাকলে সেখানে পাওয়া যায় মাত্র ৩ জন ছাত্র- ছাত্রীকে। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বলেন এখানে আগে অনেক ছাত্র- ছাত্রী ছিল কিন্তু স্যার ম্যাডামরা ঠিকমত আসতো না। নিয়মিত স্কুলও খুলতো না। আর যে কয়েকদিন আসতো ছাত্র – ছাত্রীদের খুব মারতো তাই বেশির ভাগ এই স্কুল থেকে চলে গিয়েছে। পাশে মাদ্রাসা আছে এখন সেখানে পড়ে।
এই বিষয়ে উপস্থিত মাত্র একজন শিক্ষিকা মুক্তা পারভীন বলেন, প্রধান শিক্ষক অসুস্থ তাই ছুটিতে আছে আর ছাত্র- ছাত্রী আগে ছিল এখন এখানে মাদ্রাসা বেশী হওয়ায় তারা সেখানে পড়ে। তাহলে হাজিরা খাতায় গায়েবী ছাত্র – ছাত্রীর নাম কেন? এমন প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দিতে পারেননি। বিদ্যালয়ে ৪ টি ক্লাস রুম থাকলেও ব্যবহার হয় মাত্র একটি। কাগজে কলমে নলকুপ ৪ টি থাকলেও বাস্তবে একটি সেটিও অকেজো। টয়লেট একটি সেটিও ব্যবহার উপযোগী নয়। স্কুলের লাইব্রেরিও বই শুন্য। যার ফলে শিক্ষকরা নিজেরা একটি রুটিন তৈরি করে সেভাবেই স্কুল পরিচালনা করেন।
প্রতিদিন একজন করে শিক্ষকের দায়িত্ব থাকে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করার জন্য। এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি ছুটিতে আছি এবং বাসাতেই আছি। মুক্তা ম্যাডামকে দ্বায়িত্ব দিয়েছি। সহকারী শিক্ষিকা আল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তার অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে কোন সদউওর দিতে পারেননি।এলাকাবাসীর তথ্যমতে,এলাকাবাসী বলেন,এরা কি করে কিছুই বুঝি না, এরা আসে কিছুক্ষণ থাকে তারপর চলে যায়,ছেলে- মেয়েদের এখানে কোন পড়াশোনাই হয় না। কোনদিন আমাদেরকে স্কুলে ডাকেওনি।
আগে অনেক ছাত্র- ছাত্রী ছিল কিন্তু শিক্ষকরা স্কুলই খোলা না, তাদের ইচ্ছেমত আসতো, মন চাইলে স্কুল খুলতো না চাইলে না। এজন্য বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখন মাদ্রাসায় পড়ে। সরকার থেকে তারা শুধু বেতন পায় আর খায় ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা দিয়ে তাদের কি হবে, এ বিষয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই।
শিক্ষা অফিস থেকে একদিন পরিদর্শনে একজন এসেছিল তারপর কি হলো জানি না।এই স্কুলের একদম মরা অবস্থা। সকল বিষয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার দেবনাথ বলেন, বিষয়গুলো আমার জানা ছিল না,আপনারা আমাকে জানালেন বিষয়টি অবশ্যই আমি আন্তরিকতার সহিত দেখবো।