নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলার পর সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে তাদের নিরাপদে স্থানান্তর নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. মোসফেকুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে তাকে বুধবার (১৬ জুলাই) ঢাকায় রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মোসফেকুর রহমান তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে “ট্যাংকের এসি খুব আরামদায়ক শুনেছি” শীর্ষক একটি পোস্ট করেন, যা গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের সেনা গাড়িতে করে স্থানান্তরের প্রেক্ষাপটে লেখা বলে ধারণা করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তিনি পোস্টটি ডিলিট করেন, ততক্ষণে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এই পোস্টের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতাকর্মীরা দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। আন্দোলনকারীরা মোসফেকুরের অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবি জানায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দিনাজপুর জেলা আহ্বায়ক একরামুল ইসলাম আবির অভিযোগ করেন, “এই কর্মকর্তা বারবার সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও উপহাসমূলক পোস্ট করে আসছিলেন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত ডিআইজি (হেডকোয়ার্টার্স) মিয়া মাসুদ করিমের স্বাক্ষরিত আদেশে মোসফেকুরকে তাৎক্ষণিকভাবে সদর দপ্তরে বদলি করা হয়। দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন নিশ্চিত করেছেন, “অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং তাকে হেডকোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।” তবে আন্দোলনকারীরা তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও পরবর্তীতে সেনা সদস্যদের সহায়তায় নেতাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তার এমন বিতর্কিত মন্তব্য সংকট আরও ঘনীভূত করেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।