ইমতিয়াজ উদ্দিন, জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও এক ধাপ এগোল যখন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ছাত্রলীগের ৪২১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনে স্মারকলিপি প্রদান করল।
রবিবার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, প্রক্টর ও রেজিস্টার বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আনীত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বিগত ১৭ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দায়ী। স্মারকলিপিতে বিশেষভাবে শহীদ সাজিদ ভবনে সংঘটিত একটি ঘটনার একতরফা ও তদন্তহীন বিচার প্রক্রিয়া প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, “সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্টে পরিচালিত ছাত্র আন্দোলনে যারা শান্তিপূর্ণভাবে অংশ নিয়েছে এবং কোনো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত নয়, তাদের যেন এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।”
ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদি হাসান হিমেল বলেন, “আমরা শুধুমাত্র তাদের বিচার চাই যারা বিরোধী মতের শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করেছে। তবে কেউ যদি নিরপরাধ হয়, তাকে যেন কোনোভাবেই হয়রানি করা না হয়।”
ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “ছাত্রলীগের প্রশ্নে আমরা বিন্দুমাত্র আপোষ করবো না। আমরা চাই, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতিটি সন্ত্রাসীর বিচার হোক।”
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সহিংসতা ও দমননীতির বিরুদ্ধে স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানটি ছাত্রদলের ‘বিচার দাবির আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদার, মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, শাহরিয়ার হোসেন, নাহিয়ান বিন অনিক, রাশেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সহিংসতার এই ঘটনা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের আন্দোলন ও অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল পদক্ষেপ এই পরিস্থিতি সমাধানে অপরিহার্য।