নিজস্ব প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় কৃতী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে জুড়ী উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের “পারফরম্যান্স বেইজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনস (PBSSI)” প্রকল্পের আওতায় এসএসসি, দাখিল, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবলু সূত্রধরের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ারের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই আয়োজন। তবে অনুষ্ঠানে জায়ফরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রতীশ চন্দ্র দাসকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং তাকে দিয়ে পুরস্কার বিতরণ করানোয় বিতর্ক তৈরি হয়।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী আফজাল হোসেন বলেন, “রতীশ চন্দ্র দাস একজন আওয়ামী লীগ নেতা। শিক্ষার্থীদের অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট। যারা ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা আওয়ামী লীগের হাতে নিহত হয়েছে। সেই দলের একজন নেতাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো ন্যায়সংগত নয়।”
অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি নিয়ে জবাবদিহির দাবি উঠলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার দাবি করেন, তিনি জানতেন না রতীশ চন্দ্র দাস আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত। তিনি বলেন, “এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, বিষয়টি উপেক্ষা করুন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবলু সূত্রধর বলেন, “অনুষ্ঠানের শুরুতে আমি বক্তব্য দিয়েই জরুরি কাজে চলে গিয়েছিলাম। পরে মঞ্চে কে ছিলেন তা আমার জানা নেই।”
এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফজলুর রহমান একটু ভিন্ন সুরে বলেন, “একজন শিক্ষক কেন রাজনৈতিক পদে থাকবেন? বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসনিক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের মতে, শিক্ষার মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব সম্পূর্ণরূপে মুক্ত রাখা উচিত ছিল।