মোঃ নুর আলম পাপ্পু, খোকসা ,কুষ্টিয়া, প্রতিনিধিঃ
কেউ সরকারি ঘর পেয়ে সেখানে থাকে না, আর কেউ ঘর না পেয়ে আজও রাস্তায়— অসহায়দের দেখবে কে? এই প্রশ্নটি এখন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জনগণের হৃদয়ে।
জানিপুর ইউনিয়নের নারানপুর গুচ্ছগ্রামে বিগত সরকারের আমলে ভূমিহীনদের জন্য নির্মিত ২৬টি ঘরের মধ্যে বাস্তবিকভাবে মানুষ বাস করছে মাত্র ১২টিতে। বাকি ১৪টি ঘরে কেউ নিয়মিত থাকে না — এর মধ্যে ৫ থেকে ৬টি ঘরে তো মানুষ কোনোদিন থাকেইনি।
আবাসনেরই এক বাসিন্দা স্থানীয় জানান, এখানে অনেকেই ঘর পাওয়ার পর অন্যত্র চলে গেছে বা ব্যবহার করছে না, অথচ অনেক গরিব মানুষ ঘর না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এটা কী ন্যায়সঙ্গত?
ঘরগুলোতে তালা ঝুলছে, বৈদ্যুতিক মিটার আগুনে পুড়ে গেলেও কেউ তা দেখতে আসেনি। কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই, কোনো তদারকি নেই— যেন এসব ঘর পড়ে আছে একেবারে উপেক্ষিত অবস্থায়।
সংখ্যালঘু এক বাসিন্দা নারী বলেন, আমার নিজের ঘর নেই, দিন এনে দিন খাই, রাতে কোথাও জায়গা হয় তো ঘুমাই। অথচ দেখি তালা মারা সরকারি ঘর ফাঁকা পড়ে আছে!
এই বাস্তবতা দেখে খোকসা উপজেলার কয়েকজন অসহায় ও খেটে খাওয়া নারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেছেন। তাদের দাবি একটাই, আমরা ঘর চাই, মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।
ঘটনাস্থলে ঘুরে দেখা যায়,গুচ্ছগ্রামের অনেক ঘর বছরের পর বছর তালাবদ্ধ, কেউ আসেও না, যায়ও না। অথচ প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছেন। এটি শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর মতো একটি বিষয়।
স্থায়ী এক প্রবীণ বাসিন্দার মন্তব্য ছিল সরাসরি, আমরা দেখেছি যারা প্রকৃত ভূমিহীন তারা ঘর পায় না, আর যাদের প্রভাব আছে তারা ঘর পেয়ে ব্যবহারও করে না। এর শেষ কোথায়?
প্রশাসনের টনক নড়বে কবে?
সরকারের মহৎ উদ্যোগ – ভূমিহীনদের জন্য মাথা গোঁজার ব্যবস্থা — তা যেন ব্যর্থতায় পর্যবসিত না হয়। এখন সময় দ্রুত তদারকি ও যাচাই-বাছাইয়ের। যারা প্রকৃতভাবে ঘর পাওয়ার যোগ্য, তাদের কাছে যেন এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়, এটাই এলাকাবাসীর জোরালো দাবি।
খোকসা উপজেলা প্রশাসন যেন দ্রুত মাঠে নেমে বিষয়টি তদারকি করে, অপ্রয়োজনীয় দখলদারদের উচ্ছেদ করে প্রকৃত অসহায়দের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেয়, এই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।