নিজস্ব প্রতিনিধি:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন বাণিজ্য চুক্তি (নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট) শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, চুক্তিটি প্রকাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি নেওয়া হচ্ছে এবং শীঘ্রই একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা নিশ্চিত করেছেন যে এই গোপন চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কোনো শর্ত নেই। তিনি বলেন, “যেসব বিষয় পরোক্ষভাবে দেশের স্বার্থবিরোধী হতে পারত, আলোচনার মাধ্যমে সেগুলো থেকে সফলভাবে বেরিয়ে এসেছি।” তার মতে, গোপনীয়তা বজায় রাখা সত্ত্বেও চুক্তিটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ পূরণে সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) সঙ্গে তিন দফা আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বশিরউদ্দীন। আলোচনায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বোয়িং কোম্পানি থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার সমালোচনা প্রসঙ্গে বশিরউদ্দীন বলেন, “এই ক্রয় চুক্তি বাণিজ্য আলোচনায় কোনো প্রভাব ফেলেনি। বোয়িংয়ের উৎপাদন সক্ষমতা সীমিত এবং তারা ২০৩৭ সালের আগে উড়োজাহাজ সরবরাহ করতে পারবে না।” তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মূল আগ্রহ ছিল তাদের কৃষিপণ্য রপ্তানিতে।
চুক্তির সুবিধাসমূহ সম্পর্কে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে খাদ্যপণ্য আমদানি বাংলাদেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে তুলা, ভুট্টা, সয়াবিন, গম ও এলএনজি আমদানির মাধ্যমে বছরে ২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব হবে।
শুল্ক সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, “২০% শুল্ক হারের সফলতা নির্ভর করবে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর।” বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিমান খাতের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বশিরউদ্দীন বলেন, “বাংলাদেশ বিমানের বর্তমান সক্ষমতা দিয়ে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীর মধ্যে মাত্র ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দিতে পারছে।” তিনি বিমান খাতের সম্প্রসারণের জন্য আইন ও নীতি সংস্কারের ওপর জোর দেন।