৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

লালমনিরহাটে ডালিয়া ব্যারেজে তিস্তার পানি বিপদ সীমার ৫ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত,ফের বন্যার আশংকা

রবিউল ইসলাম বাবুল, বিভাগীয় প্রতিনিধি রংপুরঃ

লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি কিছুটা কমে যাওয়ার পর ফের বাড়তে শুরু করেছে নদীর পানি। জেলার হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তর তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। এতে আবারও তিস্তা চরঞ্চালের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

রোববার (০৩ আগস্ট) দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার।

তিস্তা নদীপাড়ের মানুষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গেলো কয়েক দিন ধরে ভারতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজান থেকে নেমে আসছে পানি। ফলে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। রোববার বিকেলে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে তিস্তার পানি।

এদিকে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়তে থাকায় নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড় পরিবার গুলো। ডুবে গেছে তিস্তা চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ফসলের মাঠ। চরাঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। যোগাযোগের মাধ্যম হয়েছে নৌকা আর ভেলা। পুকুর ডুবে যাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে চাষিদের মাছ।লালমনিরহাট জেলার উপর দিয়ে তিস্তা নদী বয়ে যাওয়ায় নদীতে সামান্য পানি বাড়লে গোটা জেলা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়।

গড্ডিমারী ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ফজলে হক বলেন, ভারতের পাহাড়ী ঢলে উজান থেকে প্রচুর পানি আসছে। ইতোমধ্যে নিচু এলাকায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে। নিচু এলাকার পরিবারগুলো পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে।’

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে হু হু করে বাড়ছে। এতে আমার ইউনিয়নের প্রায় দেড় হাজারের অধিক পরিবার ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সড়ক ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’

সৃষ্ট বন্যায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দীর সঙ্গে মুঠোফোন আলোচনা হলে তিনি দৈনিক আমার বাংলাদেশ কে, বলেন,হাতীবান্ধায় বন্যাকবলিত এলাকার জন্য এ পর্যন্ত জিআর চাল-৩৪ টন,বরাদ্দ পাওয়া গেছে।পানিবন্দি ১৭০ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার ও ৫০ পরিবারের মাঝে চিড়া, মুড়ি ও গুড়, ৩ হাজার ৪ শত পানিবন্দি পরিবারেকে ১০কেজি করে চাল রিবিতরণ করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবি কম ফলে অনেক পানিবন্দি পরিবার এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ‘উজান থেকে পানি আসায় তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। রোববার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা বরাবরে প্রবাহিত হলে এতে আবারও তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। তাই এসব অঞ্চলের জনগনকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘নদী তীরবর্তী এলাকার খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। বন্যা দেখা দিলে তা মোকাবেলা করতে শুকনো খাবারসহ নতী ভাঙন কবলিত পরিবারের জন্য ঢেউটিন মজুদ রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় সরকারিভাবে সব কিছু প্রস্তুতি রয়েছে।’

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top