নিজস্ব প্রতিনিধি:
গোয়েন্দা তদন্তে উঠে এসেছে, ফেসবুকের ‘ওডিবি-এম-১৭০১’ বা ‘অপারেশন ঢাকা ব্লকেড’ নামক একটি গোপন গ্রুপের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিন। ডিবি পুলিশের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই গ্রুপের অ্যাডমিন হিসেবে সুমাইয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ডাটা এন্ট্রি, গোপন কোড তৈরি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন।
গত বুধবার মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া সুমাইয়াকে বৃহস্পতিবার ৫ দিনের রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহর আদালত এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, সুমাইয়া ইউনিলিভার বাংলাদেশে টেরিটরি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় পূর্বাচলের সি-সেল রিসোর্ট, কাঁটাবনের রেস্টুরেন্ট এবং উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে একাধিক গোপন বৈঠক আয়োজন করতেন।
১৩ জুলাই ভাটারা থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ৮ জুলাই একটি কনভেনশন সেন্টারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৩০০-৪০০ জন অংশগ্রহণ করে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করে। সুমাইয়া ও তার স্বামী মেজর সাদিকুল হক এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিলেন বলে তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুমাইয়ার জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন, যাতে তার কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যায়।
সুমাইয়ার আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহীন দাবি করেন, মামলার এজাহারে তার মক্কেলের নাম উল্লেখ নেই এবং কোনো আসামি তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়নি। তিনি আদালতে জানান, সুমাইয়া কেবি কনভেনশন হলে স্বামীর সাথে গেলেও সেখানে কী ঘটছিল তা জানতেন না।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, এই গ্রুপের মাধ্যমে ভাসমান টোকাই সংগ্রহ, সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড সংগঠিত করা এবং শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য শাহবাগ দখলের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তদন্তকারীরা এখন গ্রুপের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করতে তৎপর রয়েছেন।