নিজস্ব প্রতিনিধি:
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনপূর্ব সংস্কার বাস্তবায়নের শর্ত দিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে, যা বিএনপির নির্বাচন কৌশলে চাপ তৈরি করেছে।
জামায়াত ও এনসিপির মূল দাবি:
– জুলাই সনদের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন
– আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন
– সব দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ
বিএনপির অবস্থান ভিন্ন। দলটি চায় সংবিধান সংশোধনসহ অন্যান্য সংস্কার নির্বাচিত সংসদে করা হোক। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রেও এই অবস্থানই প্রতিফলিত হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াত ও এনসিপির এই কৌশলের পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে:
১. নির্বাচনী রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলার চেষ্টা
২. আসন বণ্টন নিয়ে দরকষাকষির সুযোগ তৈরি
৩. লন্ডন বৈঠক ও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের দাবি করেন, “সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে ‘সাজানো খেলা'”। অন্যদিকে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন অভিযোগ করেন, “সংস্কার ও বিচার এড়িয়ে শুধু নির্বাচনের দিকে ঝুঁকছে সরকার”।
বিএনপি নেতারা এই অবস্থানকে ‘মাঠের বক্তৃতা’ বলে উল্লেখ করলেও, দল দুটির ভোট বর্জনের হুমকি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ মনে করেন, “এটি আসন বণ্টন নিয়ে দরকষাকষির কৌশল হতে পারে।”
সরকারি মহলের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনই এখন দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। তবে সংবিধান সংশোধনের মতো ইস্যুতে আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, নির্বাচনকে ঘিরে দলগুলোর এই মতপার্থক্য পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে পারে। তবে সব পক্ষই জনসমর্থন হারানোর ভয়ে সরাসরি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করতে পারে বলে মত দেন তারা।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর মতে, “২০১৮ মডেলের জোট গঠন করলে এই সংকট এড়ানো সম্ভব।” অন্যদিকে সরকারি মহল আশাবাদী, সব দলই শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে নামবে।