২১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

নিঃস্ব কয়েক হাজার গ্রাহক, ১০/১৫ কোটি টাকা নিয়ে উধাও দানিক সমবায় সমিতি

মোঃ মাঈনুউদ্দিন বাহাদুর, কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি:

মুরাদনগর উপজেলা পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতি গ্রাহকদেরকে মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রায় এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় কয়েক কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করে উধাও হয়ে গেছে দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতি। এতে সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগীরা জানান এই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পেশার প্রায় কয়েক হাজার গ্রাহক কোটি কোটি টাকার আমানত জমা রাখেন। তবে শুরুর দিকে গ্রাহকদেরকে এক দুই মাস করে মুনাফা দিয়েছিলো আবার কিছু কিছু গ্রাহক এককালীন আমানত জমা রাখার পরই ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজন টাকা নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এতে সর্বস্ব হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, এসব প্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে শুরু করে কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত রেখেছেন গ্রাহকরা। পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতির লিঃ এর গ্রাহকরা লভ্যাংশ তো দূরের কথা, জমানো আমানত কীভাবে ফিরে পাবেন সেই আশায় প্রতিদিন দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতির কর্তাব্যক্তিদের কাছে ধর্না দিচ্ছেন ।

পরমতলা বহুমুখী সমবায় সমিতির একজন মহিলা গ্রাহক জানান, আমার স্বামী একজন প্রবাসী বুলু, মোছালেম কাকা পটাইয়া আমার পরিবারের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বারো লক্ষ বিশ হাজার টাকা বুলু ও মুছলেমের মাধ্যমে জমা রাখেন । আমানতের বিপরীতে প্রতিমাসে ভালো মুনাফা পাওয়ার আশায় তার প্রবাসী স্বামী বারো লাখ বিশ হাজার টাকা পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতিতে জমা রাখেন। হঠাৎ করে টাকা জমা রাখার কিছুদিন পর থেকেই মুনাফা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি অফিসে গিয়ে তালা ঝুলতে দেখেন। প্রবাসে থাকা স্বামী এ খবর পাওয়ার পর হার্ট স্ট্রোক করে মৃত্যু বরন করেন । বিধবা বলেন আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের কাছে আমি আকুল আবেদন করছি আমার আমানতের টাকা আমি যেন ফিরে পাই ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতির লিঃ এর পরিচালনা পর্ষদে যারা দ্বায়িত্বে ছিলেন তারা হলেন খোকন,বুলু, এস এ কালাম, মোছলেম মেম্বার, বছির মাষ্টারদের মাধ্যমে গ্রাহকেরা কোটি কোটি টাকা পরমতলা দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতিতে জমা রাখেন । বক্তারা বলেন খোকন, বুলু, এস এ কালাম, মোছলেম মেম্বার, বাছির মাষ্টার দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন । ৫ ই আগষ্টের পরে ধামঘর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তাদেরকে এলাকায় প্রবেশ করান দানিক বহুমুখী সমবায় সমিতির গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে । গ্রাহকেরা তাদের কাছে আমানতের টাকা চাইতে গেলে মামলার ভয়ভীতি দেখান । গ্রাহকদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে উল্টো আবুল কালাম আজাদ চেয়ারম্যানকেও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিবেন বলে হুমকি দেন ।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন আমাদের আমানতের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করুন এবং খোকন, বুলু, এস এ কালাম, বাছির মাষ্টার, মোছলেম মেম্বার সহ যারা নিরীহ গ্রাহকদেরকে আমানতের টাকা চাইতে গেলে হুমকি দেয়, মামলার ভয় দেখায় । আমরা প্রশাসনের কাছে জোড় দাবি জানাই তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করুন ।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top