নিজস্ব প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ডিপিএইচই) সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় অর্ধশত কোটি টাকার ১৬টি দরপত্রে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ‘ডাবল ভেসেল আয়রন রিমুভাল সরবরাহ ও সংযোজন’ কাজের সকল দরপত্র ‘মেসার্স শামীম ট্রেডার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান একচেটিয়াভাবে পেয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
স্থানীয় ঠিকাদাররা দাবি করেছেন, ডিপিএইচইর কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে ‘রেট কোড’ সরবরাহ করায় একটি মাত্র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সকল কাজ হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস একজন মাত্র ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস, প্রাক্কলনিক মারজান বেগম, হিসাব সহকারী খগেন্দ্র চন্দ্র নাথ, ক্যাশিয়ার শুভ নন্দী ও অফিস সহকারী এসএম ইকবাল একটি সিন্ডিকেট গঠন করে এই অনিয়মে জড়িত রয়েছেন। রুম্মান শিকদার নামের এক ঠিকাদার স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
দরপত্র আহ্বানের সময় বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ কাজে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ঠিকাদারদের অংশ নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়ায় বেশির ভাগ ঠিকাদার অংশ নিতে পারেননি।
নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ই-জিপির মাধ্যমে সরকারি বিধান অনুযায়ী যোগ্য ঠিকাদার কাজ পেয়েছেন। তার কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেই এবং কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।
প্রাক্কলনিক মারজান বেগম বলেছেন, “অফিস বিভিন্ন সিন্ডিকেট কাজ করছে। আসলে সবকিছু নির্বাহী প্রকৌশলী ডিল করে থাকেন। আমরা ছোট পোস্টে চাকরি করি। এত কিছু জানি না।”
ক্যাশিয়ার শুভ নন্দী এবং হিসাব সহকারী খগেন্দ্র চন্দ্র নাথও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, টেন্ডার কমিটিতে তারা থাকেন না এবং টেন্ডার বিষয়ে সবকিছু নির্বাহী প্রকৌশলী দেখভাল করেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ‘মেসার্স আরণ্যক’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, যা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সুপারিশে ২০২২ সালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগদানের পর একচেটিয়া কাজ পেয়েছে।