২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নোয়াখালী হাতিয়ার মানুষকে জিম্মি করে রেখেছেন লঞ্চ মালিক:আমলে নিচ্ছেন না BIWTA

মো: দিদার উদ্দীন, হাতিয়া প্রতিনিধি:

দিনের আকাশে তখন বিকেল পাঁচটা। ঢাকা থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়েছে লঞ্চ ফারহান। ও লঞ্চ তাসরিফ।সবকিছু ঠিকঠাক ছিলো। রাত ৩ টায় মাঝরাতে অনিরাপদ ট্রলারে নামিয়ে দেওয়া হয় নারী, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীদের, অন্ধকার, ঢেউ আর ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা।ঢাকা থেকে হাতিয়াগামী লঞ্চ সার্ভিস নিয়ে প্রতিদিন যে ভোগান্তি চলছে, তা কেবল একটি যাতায়াত সমস্যা নয়, এটি হাজার হাজার মানুষের জীবন নিয়ে চরম ঝুঁকি।

নিয়মিত লঞ্চ হাতিয়া ঘাটে না এসে মাঝপথে তজুমুদ্দিতে থামিয়ে দিচ্ছে। এরপর গভীর রাতে, যখন বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন তাদের উত্তাল মেঘনা নদীতে ছোট ট্রলারে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার শিকার হচ্ছেন সবচেয়ে অসহায় যাত্রীরা— ঘুমন্ত নারী, শিশু ও বয়স্করা। রাতের অন্ধকার, নদীর ঢেউ এবং ছোট ট্রলারের অনিরাপদ পরিবেশ— সব মিলিয়ে এটি একটি বিভীষিকাময়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন আমরা ঢাকা থেকে মালামাল অর্ডার করলে মালামাল লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নিতে যাচ্ছেন না আমরা বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীকে মালামাল দিতে পারতেছি না।
এতে বিভিন্ন মালামালের দাম বৃদ্ধি হয়।

বিশেষ করে ঢাকা থেকে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে যে সকল মালামাল গুলো আনা নেওয়া করা হয় তা লঞ্চের মাধ্যমে। লঞ্চ যখন কিছুদিন ধরে তজুমদ্দিন এসে থেমে যায়।
হাতিয়াতে আসতে চায় না। লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এতে হাতিয়ার ব্যবসায়ীরা এবং যাত্রীরা এই হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।

একজন ভুক্তভোগী জানান, জীবনের চরম অভিজ্ঞতা হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি আর কস্ট দেখে নিজেকে যেন সাগরের বুকে হারিয়ে ফেলেছি। লঞ্চ যাতায়াতের সিন্ডিকেটের সমাধান চাই।

অভিযোগ উঠেছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দ্বিমুখী আচরণ লঞ্চ কর্তৃপক্ষ প্রায়ই আবহাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে হাতিয়া পর্যন্ত যেতে অস্বীকৃতি জানায়। অথচ একই প্রতিকূল আবহাওয়ায় যাত্রীদের ট্রলারে করে হাতিয়া যেতে বাধ্য করা হয়! এটি কেবল একটি মিথ্যা অজুহাত নয়, বরং যাত্রীদের জীবনের প্রতি চরম অবহেলা। এই দ্বিচারিতা প্রমাণ করে যে তাদের কাছে যাত্রীদের নিরাপত্তা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়।

হাতিয়া বাসীর দাবী যদি আবহাওয়া এতই খারাপ হয়, তাহলে লঞ্চ কেন ঢাকা থেকে ছাড়া হয়? যদি লঞ্চ ছাড়েই, তাহলে কেন তা হাতিয়া ঘাট পর্যন্ত আসে না? এই অনিরাপদ নোকাই যাত্রায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষের জীবনের দায়ভার কে নেবে?

এই চরম অব্যবস্থাপনা এবং মানুষের জীবন নিয়ে খেলা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। হাতিয়ার লাখো মানুষের পক্ষ থেকে আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং লঞ্চ মালিকদের কাছে কিছু জরুরি দাবি জানাচ্ছি: নিয়মিত লঞ্চ চলাচল: ঢাকা-হাতিয়া রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো যেন প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সরাসরি হাতিয়া ঘাটে আসে, তা নিশ্চিত করা হোক।
ঝুঁকিপূর্ণ ট্রলার যাত্রা বন্ধ: মাঝরাতে যাত্রীদের ট্রলারে নামিয়ে দেওয়ার এই অমানবিক ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত: এই রুটে যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর তদারকি ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা চালু করা হোক।

হাতিয়ার মানুষ আর কত অবহেলার শিকার হবে? একটি নিরাপদ এবং মানবিক যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা তাদের অধিকার। হাতিয়া বাসীর আশা করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top