জাকির হোসেন হাওলাদার, দুমকী ও পবিপ্রবি প্রতিনিধি :
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বুকে ২৬ আগষ্ট (মঙ্গলবার) ভিন্ন এক আনন্দের আবহ তৈরি হয়। পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদ (ইএসডিএম) পা রাখল তার গৌরবময় ১৬তম বছরে। “একসাথে লড়বো, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং পরিবার রক্ষা করে বাংলাদেশ গড়বো”— এ স্লোগানকে সামনে রেখে দিনটি পরিণত হয় উৎসব আর অঙ্গীকারের এক মহামিলনে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মহসীন হোসেন খান। এছাড়াও ছিলেন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক, বরেণ্য তরুণ প্রকৌশলী (সিভিল) ও অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের উপপরিচালক মোঃ মুহাইমিনুল আলম ফাইয়াজ। তাঁদের সঙ্গে অনুষদের অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সরব অংশগ্রহণে ক্যাম্পাস রূপ নেয় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এক মিলনমেলায়।
আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয় অনুষদের সম্মুখে আনন্দঘন কেক কেটে এবং তা সবাইকে খাওয়াইয়ে। এরপর প্রধান অতিথির নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে বের হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি। শিক্ষার্থীদের হাতে শোভা পায় বহুরঙের ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড, যেখানে লেখা ছিল পরিবেশ রক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবিলার অনুপ্রেরণামূলক বার্তা। পুরো পরিবেশ হয়ে ওঠে উজ্জীবনী স্লোগান আর ভবিষ্যতের আশায় মুখর।
অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের উপপরিচালক তরুণ প্রকৌশলী মোঃ মুহাইমিনুল আলম ফাইয়াজ তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে তরুণদের স্বপ্ন বুনে দিয়ে বলেন, “বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর জ্ঞানের সমন্বয়ে আমরা দুর্যোগকে হার মানাতে পারি। আমাদের হাতে যে শক্তি আছে, তা দিয়ে গড়ে তোলা সম্ভব একটি টেকসই ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তোমাদের উদ্যম, সৃজনশীলতা আর মানবিক চেতনার মধ্য দিয়েই আসবে সেই দিন।”
অন্যদিকে অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মহসীন হোসেন খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “আজকের এই দিনটি কেবল একটি উদযাপন নয়, এটি দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার দিন। পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেবল পাঠ্যসূচির বিষয় নয়; এটি হলো জীবন ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। সেই সংগ্রামে তোমরাই হবেন অগ্রদূত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন,“ইএসডিএম অনুষদ কেবল শিক্ষার একটি ক্ষেত্র নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য এক অবিচ্ছিন্ন প্রেরণা। এই অনুষদের প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষার্থী আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে কাজ করছেন। তাঁদের গবেষণা ও প্রয়াসই বাংলাদেশকে দুর্যোগ-সহনশীল ও পরিবেশবান্ধব রাষ্ট্র গঠনে বড় অবদান রাখবে।”
পুরো আয়োজন জুড়ে শিক্ষার্থীদের প্রাণোচ্ছল অংশগ্রহণ প্রমাণ করল—ইএসডিএম কেবল একটি অনুষদ নয়, এটি এক পরিবার, যেখানে প্রত্যেকে শিখছে দায়িত্ব, ভালোবাসা আর অঙ্গীকারের পাঠ। ১৬ বছরের এ যাত্রা যেন নতুন স্বপ্ন, নতুন দিগন্ত আর টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এক শক্তিশালী অঙ্গীকার হয়ে ধরা দিল।