মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) শ্রমিক অসন্তোষে উত্তপ্ত হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষের পরপরই পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি যৌথভাবে মোতায়েন হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইকো কোম্পানির কর্মী হাবিব ইসলাম (২০) নিহত হন। তিনি সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন শ্রমিক। তাদের মধ্যে পাঁচজন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শ্রমিকরা জানান, এভারগ্রীন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা দুই দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন। এরমধ্যে সোমবার রাতে কর্তৃপক্ষ হঠাৎ কারখানা বন্ধের নোটিশ দিলে মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
৫৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম বদরুদ্দোজা বলেন, “পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদার রাখা হয়েছে।”
অন্যদিকে, এভারগ্রীন কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশে জানিয়েছে— টানা আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী কারখানাটি ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় চালুর বিষয়ে জানানো হবে।
এ ঘটনায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা ২০ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—
উৎপাদন টার্গেট কমানো, ওভারটাইম নিশ্চিত করা, বেতন-ভাতা সময়মতো দেওয়া, নিয়মিত ছুটি প্রদান, আবাসন ও প্রমোশন সমস্যা সমাধান, সকাল ৭টার আগে ডিউটি বাতিল, গর্ভবতী শ্রমিকদের বিশেষ সুবিধা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ, ক্ষুদ্র কারণে চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা।
এদিকে নীলফামারী জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।