মোহাম্মদ নয়ন, তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি:
ভোলায় রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে মসজিদের খতিব ও মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আমিনুল হক নোমানী (৪৫) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর চর নেয়াবাদ এলাকায় মাওলানা এনামুল হকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাওলানা আমিনুল ইসলাম নোমানী ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও সদর উপজেলা মসজিদের খতিব। এর বাহিরেও তিনি ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভোলা জেলা সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
স্থানীয়রা জানান, মাওলানা আমিনুল ইসলাম নোমানী এশারের নামাজ পড়ে বাসায় যান। কিছুক্ষণ পরই পথচারীরা তার ঘরে চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে যান তার ঘরের দরজায়। কিন্তু বাড়ির গেট বন্ধ থাকায় পিছন দিয়ে টিনের প্রাচীর ভেঙ্গে ঘরের ভেতর প্রবেশ করতেই দেখা যায় তার রক্তাক্ত দেহ মাটিতে পরে তিনি ছটফট করছেন। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায়ই তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাওলানা আমিনুল ইসলামের স্ত্রী তজুমদ্দিনে তার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যাওয়া ও একমাত্র সন্তান লক্ষ্মীপুরে পড়াশোনা করার কারণে ওই মুহূর্তে তিনি বাসায় একাই ছিলেন।
এদিকে ঘটনার পরপরই তাকে এক নজর দেখতে ভোলা সদর হাসপাতালে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইমান আকিদা সংরক্ষণ কমিটি, ইসলামিয়া ঐক্য আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী সহ তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এই সময় তারা ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি পুরো শহর জুড়ে তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তারা বলেন, মাওলানা আমিনুল ইসলাম নোমানী অত্যন্ত ভালো ও একজন আদর্শবাদী লোক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মাদ্রাসায় চাকরি ও মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের তার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত একটি মাদ্রাসাও পরিচালনা করছিলেন।
ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোবাশ্বিরুল হক নাঈম জানান, কেনো বা কি কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে এখন পর্যন্ত আমরা কিছুই জানতে পারিনি।
তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিরুনি অভিযান চালিয়ে প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন তিনি।
একইভাবে জামায়াতে ইসলামের সদর উপজেলা আমির মাওলানা কামাল হোসাইন, পৌর আমির জামাল উদ্দিন, হেফাজতে ইসলামের জেলা সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে দিয়ে বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে শুধু ভোলাই নয়, দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেন তারা।
এ ঘটনা খুবই মর্মাহত ও দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে ভোলার পুলিশ সুপার মোঃ শরিফুল হক জানান, লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত করার পর পরবর্তীতে কিছু বলা যাবে। এমনকি এই ঘটনায় সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে অবশ্যই খুঁজে বের করে আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান তিনি