নিজস্ব প্রতিনিধি:
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে স্থগিত হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, “আপনারা কী মনে করেন, আমি ফজু পাগলা? আমাকে কি পাগল মনে হয়? আমাকে পাগল আখ্যা দিয়ে আসলে রাজাকারেরা নিজেদের বাঁচাতে চায়। শুধু আলবদর আর রাজাকারের বংশধররাই আমাকে ফজু পাগলা বলে।”
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের হাওড় মিঠামইনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ফজলুর রহমান বলেন, “যখন দেখি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা হচ্ছে, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমকে বৃথা করা হচ্ছে, তখন আমি চুপ থাকতে পারি না। আমি তাদের ছাড়বো না যারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে। আমার সঙ্গে যুক্তিতে না পেরে কিছু মাওলানা যেমন আজহারি, আমির হামজা, আহমাদুল্লাহ আমাকে পাগল বলতে শুরু করেছে।”
জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের পরও জামায়াত বলে এটা ছিল ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, ভারত লাগিয়েছে এই যুদ্ধ। আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আমৃত্যু কথা বলবো, কোনো আপস নেই। যেদিন জামায়াত লিখলো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, যোদ্ধারা নাকি হিন্দু ছিল, সেদিন আমি বলেছি — আলবদরের বাচ্চারা, রাজাকারের বাচ্চারা, আমি এখনো জীবিত আছি। আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলবো।”
তিনি জামায়াতের আমিরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, “সিলেটে ১৯টি আসন আছে, যেকোনো একটি আসনে দাঁড়ান। আমি আমার দল থেকে সেই আসনে দাঁড়াবো। যদি একটিতেও জিততে পারেন, তখন ভাববো আপনারা সত্যিকারের বীর।”
ফজলুর রহমান বলেন, “আমি ধর্মবিদ্বেষী নই, জামায়াত বিদ্বেষী। আমি একজন ধর্মবিশ্বাসী মুসলমান। জামায়াত ইসলাম নয়, তারা জামা-কাপড়ে ইসলাম। তাদের প্রতি আমার ঘৃণা আছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে অংশ নিতে চাই। দলের কাছে অনুরোধ, আমাকে ধানের শীষ মার্কা দেওয়া হোক।”
তিনি আরও বলেন, “দল আমাকে তিন মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে, আমি তা মেনে নিয়েছি। তবে আমার একটাই চাওয়া — আমাকে প্রার্থী করা হোক এবং জনগণ দলের কাছে ফজলুর রহমান ও ধানের শীষ এই দুইটি দাবি তুলুন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইব্রাহীম। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি কয়েক হাজার নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।