নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের লালন সম্রাজ্ঞী খ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
৭১ বছর বয়সী ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সপ্তাহে দুই দিন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হতো তাকে। চলতি বছরে তিন দফায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। ফেব্রুয়ারিতে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ১৩ দিন হাসপাতালে থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। পরে ৫ জুলাই আবারও আইসিইউতে ভর্তি হয়ে টানা দুই সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়। শেষবার ২ সেপ্টেম্বর ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হলে ফের হাসপাতালে ভর্তি হন এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
তার পরিবার জানিয়েছে, ফরিদা পারভীনের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। বড় ছেলে ইমাম নিমেরী বলেন, পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার সব খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না।
নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে সঙ্গীতজীবন শুরু করলেও ফরিদা পারভীন পরবর্তীতে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে লালনগীতির সাধনায় নিয়োজিত করেন। প্রায় পাঁচ দশক ধরে তিনি লালনগীতি চর্চা ও জনপ্রিয়করণে অবদান রেখে আসছেন। তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে একুশে পদক এবং ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান। এছাড়াও চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক গেয়ে ১৯৯৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
নতুন প্রজন্মকে লালনগীতির সঙ্গে পরিচিত করাতে প্রায় ১৬ বছর আগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। তবে শারীরিক অসুস্থতা, আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়া এবং নিজস্ব ভবন না থাকায় একাডেমিটি টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।