নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন ও দোকানের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই মানসম্মত খাবার পরিবেশনের দাবি উঠে আসছে। তবে এসব অনিয়মে সরাসরি জরিমানা বা সতর্কতামূলক নোটিশ দেওয়ার ঘটনা খুব একটা দেখা যায়নি।
এবার নবনির্বাচিত একাধিক হল সংসদ নেতার বিরুদ্ধে ক্যান্টিন মালিক ও দোকানদারদের জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর মাস্টারদা সূর্যসেন হলের একটি দোকানে এক কেজি টেস্টিং সল্ট মজুত রাখার অভিযোগে নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক দোকানদারকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ নিয়ে একটি লিখিত চুক্তিও হয়। চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়, তিন দিনের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করলে দোকানের চুক্তিনামা বাতিলের সুপারিশ করা হবে এবং জরিমানার অর্থ হল প্রশাসনের মাধ্যমে আদায় করা হবে।
ভিপি আজিজুল হক জানান, দোকানে তল্লাশি চালিয়ে টেস্টিং সল্ট পাওয়া যায় এবং দোকানদার তা ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে এবং জরিমানার অর্থ হল প্রশাসনের মাধ্যমেই আদায় হবে।
এছাড়া জহুরুল হক হলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) খালেদ হাসানও টিনশেড ক্যান্টিনে টেস্টিং সল্ট পাওয়ায় এক হাজার টাকা জরিমানা করেন। তিনি ক্যান্টিন মালিককে তিন দিনের মধ্যে জরিমানা পরিশোধ ও হল প্রশাসনের কাছে জবাবদিহির নির্দেশ দেন। নিজের ফেসবুক পোস্টেও তিনি এ বিষয়ে উল্লেখ করেন।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সমাজসেবা সম্পাদক জহির রায়হানও টেস্টিং সল্ট রাখার অভিযোগে এক দোকানিকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। তিনি বলেন, দোকানিকে বহুবার সতর্ক করা হলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ এখনো আদায় হয়নি, তবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে খাবারে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগে নবনির্বাচিত সমাজসেবা সম্পাদক মো. সাইফুল্লাহ ক্যান্টিন মালিকদের সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, দোকানদারদের লিখিত চুক্তি নেওয়া হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে অনিয়ম ধরা পড়লে প্রশাসন জরিমানা করতে পারে।
এ বিষয়ে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, নবনির্বাচিত নেতারা নতুন হওয়ায় হয়তো তারা বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হল সংসদ নেতাদের কোনোভাবেই সরাসরি জরিমানা করার এখতিয়ার নেই। তারা যদি কোনো অনিয়ম দেখতে পান, তবে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে হবে।