নিজস্ব প্রতিনিধি:
কত টাকার নায়ক ছিলেন সালমান শাহ—এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে তা হয়তো অর্থহীন মনে হতে পারে। কারণ টাকার অঙ্কে মাপা যায় না তার মেধা, জনপ্রিয়তা এবং মৃত্যুর এত বছর পরও কিংবদন্তি হয়ে থাকার মর্যাদা। তবুও কালজয়ী এই নায়কের জীবনের প্রতিটি বিষয়ই আজও ভক্ত-অনুরাগীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু। তারা জানতে চান, সিনেমার বাজারে তার চাহিদা কতটা ছিল, কিংবা কত টাকা পারিশ্রমিক নিতেন তিনি। আজ সালমান শাহের জন্মদিনে সেই গল্পই সামনে এলো।
সালমান শাহ ঢাকাই সিনেমায় এসেছিলেন ধূমকেতুর মতো। যেন তিনি এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন। ক্যারিয়ারের মাত্র চার বছরের মধ্যেই নিভে গেল সেই উজ্জ্বল নক্ষত্র, কিন্তু আজও তার আলো ম্লান হয়নি। তিনি এখনো বাংলা চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে আবেগের নাম, স্বপ্নের রাজকুমার হয়ে আছেন।
১৯৯২ সালের আগস্টে সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন সালমান শাহ। এর পরের বছর ১০ মার্চ ছবিটি মুক্তি পেলে বদলে যায় তার জীবন। তিনি হয়ে ওঠেন সারা বাংলার ক্রেজ এবং হার্টথ্রব নায়ক। একইসঙ্গে চলচ্চিত্রের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন এবং দামি নায়কও হয়ে ওঠেন তিনি।
সালমান শাহের প্রথম সিনেমার পারিশ্রমিক ছিল মাত্র ২৫ হাজার টাকা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার সাবেক স্ত্রী সামিরা। তিনি জানান, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির বিপুল সাফল্যের পর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সালমানের পারিশ্রমিক। ‘তুমি আমার’ ছবির জন্য তিনি প্রথমবারের মতো ১ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। পরে ‘দেনমোহর’ সিনেমার জন্য দেড় লাখ এবং সর্বশেষ ছটকু আহমেদের ‘বুকের ভিতর আগুন’ ছবির জন্য ১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন তিনি।
সামিরা আরও জানান, ১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে সালমান শাহ তখন ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে দামি নায়ক হয়ে ওঠেন। তার সামনে আরও অনেক সিনেমার প্রস্তাব ছিল, আর পারিশ্রমিক বাড়ানোর পরিকল্পনাও করেছিলেন তিনি।
কিন্তু ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সব কিছু থেমে যায়। সেদিনই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান সবার প্রিয় সালমান শাহ। রয়ে যায় তার কালজয়ী সব সিনেমা, অগণিত ভক্তের ভালোবাসা এবং অকাল মৃত্যুর রহস্য।